ঢাকা,  বুধবার
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

নানা অভিযোগে অভিযুক্ত রাজশাহীর পবার ইউএনও বদলি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী

প্রকাশিত: ২০:২৬, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নানা অভিযোগে অভিযুক্ত রাজশাহীর পবার ইউএনও বদলি

ছবি : মেসেঞ্জার

নানা অভিযোগে অভিযুক্ত রাজশাহীর পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাতকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের মাঠ প্রশাসন শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার ফয়সাল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার ইউএনও হিসেবে বদলি করা হয়।

জানা গেছে, এক বছর আগে পবার ইউএনও পদে যোগদান করেন আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত। তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে, জুনে পবার কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি ছাড়াই ৯১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শুরু করেন তিনি। নওগাঁর আত্রাই থেকে নিজের চাচাতো ভাই রাজীব রনককে এনে তাঁকে দিয়ে কাজ করছিলেন তিনি। রাজীব রনক পবায় ইউএনওর সরকারি বাসভবনেই থাকতেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩০টি ঘর নির্মাণে ইটভাটা থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউএনও’র বিরুদ্ধে। পবার হরিয়ানে পুকুর কাটতে দেওয়ার বিনিময়ে ইটভাটার মালিকের থেকে ঘুষ নেওয়া হয় বলে অভিযোগে জানা যায়। 

পবা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পবায় ঘুষের চুক্তি করে পুকুর খনন করতে দিতেন ইউএনও। কোথাও পুকুর খননের কথা শুনলে তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের ফোন করে দেখা করতে বলতেন।

চেয়ারম্যানরা পুকুর খননকারীর সঙ্গে মধ্যস্থতা করে দিতেন। বিঘাপ্রতি চুক্তি হতো ২০ হাজার টাকা। সম্প্রতি এক ইউপি চেয়ারম্যানের অফিসে গিয়ে তাঁর কাছ থেকে পুকুর খননের ৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে আসার অভিযোগ ওঠে ইউএনওর বিরুদ্ধে।

এভাবে এক বছরে পবায় অন্তত ২০০ পুকুর খননের অভিযোগ রয়েছে। প্রতিটি পুকুরের আয়তন ১০ থেকে ৪০ বিঘা পর্যন্ত। আইন লঙ্ঘন করে ফসলি জমিতে এসব পুকুর খনন করতে গিয়ে কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে ইউএনও’র বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, (৫ আগস্ট) আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পবার খড়খড়ি হাটের ইজারা বাতিল করেন ইউএনও। নিয়ম অনুযায়ী, সেখানে ভূমি অফিসের তহশিলদার খাস আদায় করবেন। কিন্তু খাস আদায় করছিলেন পারিলার ইউপি চেয়ারম্যান সাঈদ আলী মুর্শেদের লোকজন।

হাটে সবখরচ বাদ দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৫০ হাজার টাকা আদায় হয়। আদায় করা টাকার বড় অংশ ইউএনও ও চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ইউপি চেয়ারম্যান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সূত্র জানায়, ইউএনও হাসনাতের সব অনিয়মের সহায়ক অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক সাদ্দাম হোসেন।

সম্প্রতি সাদ্দামকে অন্য উপজেলায় বদলি করা হয়। কিন্তু এরপরও সাদ্দামকে সন্ধ্যার পর অফিসে এনে কাজ করাতেন ইউএনও। সরকারি গাড়ির অপব্যবহার এবং উপজেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে ইউএনও হাসনাতের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে ইউএনও আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাতকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তবে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) চাচাতো ভাই রাজীব রনককে দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ করানোর অভিযোগ অস্বীকার করলেও রাজীব রসক স্বীকার করেন।

মেসেঞ্জার/আনিসুজ্জামান/তারেক

×
Nagad