ঢাকা,  বুধবার
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে লক্ষ্মীপুরবাসী, ২৪ ঘন্টায় বিদ্যুৎ মিলছে ৫-৬ ঘন্টা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:০৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে লক্ষ্মীপুরবাসী, ২৪ ঘন্টায় বিদ্যুৎ মিলছে ৫-৬ ঘন্টা

ছবি : মেসেঞ্জার

লক্ষ্মীপুরে ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভয়াবহ লোডশেডিং। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেশি বিপাকে পড়েছে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা। কয়েকদিন থেকে ঘন-ঘন লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে লক্ষ্মীপুরবাসী। সাধারণ মানুষের অভিযোগ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ থেকে ১৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না গ্রাহকরা।

অতিমাত্রায় লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবনে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ঘন-ঘন লোডশেডিংয়ে বন্যার মধ্যে সাপের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন লক্ষ্মীপুরবাসী। এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম পাওয়ায় লোডশেডিং অনেকটা বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে লোডশেডিং সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা তাঁদের।

খবর নিয়ে জানা গেছে, জেলার পৌর এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। সে হিসাবে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের পিডিবির গ্রাহক রয়েছে ৪২ হাজার, যার জন্য বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৬-১৭ মেগাওয়াট। কিন্তু চাহিদার তুলনায় তাঁরা বর্তমানে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন মাত্র ৭ মেগাওয়াট।

এতে দিনে-রাতে মিলে প্রায় ১৮-১৯ ঘণ্টার বেশি হচ্ছে লোডশেডিং। প্রতি ঘণ্টায়-ঘন্টায় হচ্ছে লোডশেডিং। একই অবস্থা পল্লী বিদ্যুতেরও, যেখানে ২৪ ঘণ্টায় ৬ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পান না গ্রাহকরা। লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাসিন্দা তসলিম উদ্দিন বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পার করছে লক্ষ্মীপুরবাসী। বন্যায় বেড়েছে সাপের উপদ্রব। তারমধ্যে রাতে থাকেনা বিদ্যুৎ। এতে সাপের ভয়ে বিদ্যুৎবিহীন নির্ঘুম রাত কাটছে আমাদের।

জেলা শহরের গৃহিণী আফরোজা আক্তার বলেন, দিনে ও রাতে সবসময় অব্যাহত থাকে লোডশেডিং। দুপুরে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পেয়েছি আধাঘন্টা। এতে অসহ্য গরমে ছোটো সন্তান নিয়ে বড় সন্ত্রনার মধ্যে রয়েছি। তাছাড়া ঘন-ঘন লোডশেডিং নষ্ট হচ্ছে বিদ্যুৎচালিত জিনিসপত্র।

লক্ষ্মীপুর পৌর আইডিয়াল কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ছকিনা বেগম, শাহেদ আলীসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ভয়াবহ লোডশেডিং, যা বলে বুঝানো যাবে না। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি আমরা আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারা। ১২ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ যায় ১৩ বার। এমন পরিস্থিতিতে আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষ সব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। 

রাজিবপুর এলাকার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক মনির বলেন, বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে। কিন্তু লোডশেডিং এত বেশি যা বলে বুঝানো যাবে না। বন্যার মধ্যে অতিমাত্রায় লোডশেডিংয়ে মানুষের কষ্ট বেড়েছে কয়েক গুণ। বিদ্যুৎবিহীন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিশু, বৃদ্ধ সবাই।

পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা জামাল, লোকমা ও সুফিয়ান বলেন, বিদ্যুৎ আমাদের সাথে লুকোচুরি খেলছে। মনে হয় ৪-৫ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাই না। রাতে বিদ্যুৎ গেলে পানির মধ্যে চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়। তাঁর উপর রয়েছে সাপের ভয়। বিদ্যুৎবিহীন আমাদের বন্যার্তদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

লক্ষ্মীপুর পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আমিন বলেন, আমাদের ৪২ হাজার গ্রাহকের জন্য পাচ্ছি মাত্র ৭ মেগাওয়াট। যেখানে আমাদের চাহিদা রয়েছে ১৬-১৭ মেগাওয়াট। তাঁর ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে হাসপাতাল ও পৌরসভার পানির পাম্প। সেগুলো কাভার করে যা পারছি তা শিডিউল অনুযায়ী কাভার করছি। মূলত চাহিদার চেয়ে কম হওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে। 

মেসেঞ্জার/শিবলু/তারেক

×
Nagad