ছবি : মেসেঞ্জার
'নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় একাত্মতা প্রকাশ করেছেন চরফ্যাসন উপজেলা বিএনপি সমর্থিত সকল অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। প্রথমবারের মতো ভোলা-৪ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশি কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন এর প্রতি সমর্থন জানিয়ে দলবদ্ধ হচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থক।' এসব কথা বলেছেন চরফ্যাসন উপজেলা যুবদলের আহবায়ক শহিদুল আলম প্রিন্স।
শহিদুল আলম প্রিন্স আরও বলেন, 'স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকার হটাতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদকের অগ্রণী ভুমিকা সর্বজন প্রসংশনীয় হওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ে তার প্রতি আস্থা বেড়েছে জনগণের।'
কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেছেন চরফ্যাসন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন আলমগীর মালতিয়া। তিনি বলেছেন, 'সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলমের সবচেয়ে বড় শক্তি তৃণমূলের নেতৃত্ব তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তিনবার এমপি ও দীর্ঘ সময় চরফ্যাসন উপজেলা বিএনপির সভাপতি থাকায় নেতৃত্বের পূর্ণ কাঠামো তার হাতেই তৈরি। তাছাড়া সাধারণ জনগণের মাঝে আলমের বেশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই আমরা বিশ্বাস করি আগামী নির্বাচনে নাজিম উদ্দীন আলমকে দল মনোনয়ন দিবে। আমরা তার পক্ষে চরফ্যাসনে কাজ করছি।'
নাম প্রকাশ না করা শর্তে চরফ্যাসন উপজেলা বিএনপির আরও এক প্রভাবশালী নেতা বলেন, 'তারেক রহমানের দূরদর্শী নেতৃত্বে চরফ্যাসন উপজেলা বিএনপি সুসংগঠিত। আমরা ভোলা-৪ আসনে তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম এর নেতৃত্বাধীন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম এখনও আছি।
আমাদের প্রত্যাশা দলের হাই কমান্ড সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম কে মূল্যায়ন করবে। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরেই বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ। অনুপ্রবেশকারীদের কারণে বিএনপির সুনাম নষ্ট হচ্ছে।' এদের চিহ্নিত করে দলের সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছে।
নির্ভরযোগ্য তথ্যে জানা গেছে, এই দুই হেভিওয়েট নেতার কর্মি ও সমর্থকরা স্থানীয়ভাবে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করতে সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন চরফ্যাসন উপজেলা শহর থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে। সাম্প্রতিক সময়ে চরফ্যাসন উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করেছে ভোলা জেলা বিএনপি।
কমিটি বিলুপ্তের পর থেকেই চরফ্যাসন উপজেলার বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতারা নিজের জানান দিতে ও ত্যাগি প্রমাণ করতে প্রতিনিয়ত মিছিল, শোডাউন ও পথসভা করছেন। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকে নিজেকে দুর্দিনের কান্ডারী দাবী করে স্টাটাস কিংবা পুরোনো ছবি পোস্ট করে সরব রয়েছেন।
মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন এর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে এবং তার সান্নিধ্যে পেতে চরফ্যাসন ও মনপুরা থেকে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে জনস্রোত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে চরফ্যাসন উপজেলা বিএনপির প্রথম সারির বেশ কয়েকজন নেতা তার নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেছেন।
চরফ্যাসন পৌর যুবদলের আহবায়ক আবু বকর ছিদ্দিক মিলটন বলেন, 'হাজারো শিক্ষার্থী ও আমজনতার রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। (৫ আগস্ট) আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে চরফ্যাসন ও মনপুরা উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত রয়েছে। মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন ভাই বাংলাদেশের যুব নেতৃত্বের আইডল।
তার নেতৃত্বের ছায়াতলে আমরা ঐক্যবদ্ধ। অবৈধ সরকারের করালগ্রাস থেকে বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছে যুবক ও ছাত্র-জনতা। এর ধারাবাহিকতায় চরফ্যাসন-মনপুরার মানুষের ভালোবাসা নিয়েই যুবনেতা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন ভাই এগিয়ে যাবে।'
ভোলা-৪ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম বলেন, 'প্রায় ১৭ বছর আমাদের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছে আওয়ামীলীগ। (৫ আগষ্ট) স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা মতে কোনো দখল বা চাঁদাবাজির দায় বিএনপি নেবে না এই বলে চরফ্যাসন ও মনপুরা উপজেলার নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছি। তাদের বলে দিয়েছি এতদিন ধৈর্য ধরেছেন আর কিছুদিন ধৈর্য ধরে দলের জন্য কাজ করুন। তিনি আরো বলেন, রাজপথে বহু আন্দোলন সংগ্রাম করে মামলা-হামলার স্বীকার হয়েছি। তারপরও রাজপথ থেকে সরে যাইনি।
আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এসব বিবেচনা পূর্বক দল অবশ্যই ভোলা-৪ (চরফ্যাসন-মনপুরা) আসনে আমাকে মনোনয়ন দেবে। তাছাড়া চরফ্যাসন ও মনপুরা আসনে বিএনপির কোনো বিভেদ বা গ্রুপ চাইনা। আমরা সবাই এক এবং দলের স্বার্থে সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার হয়েই বিএনপির নেতাকর্মীরা কাজ করবে।'
একই আসনে (ভোলা-৪) বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, '(৫ আগষ্ট) স্বৈরাচার সরকার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় মতে আমি চরফ্যাসন ও মনপুরা আসনে আমার পক্ষের নেতাকর্মীদেরকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে দিয়েছি যে-দখলদার, ও চাঁদাবাজদের স্থান বিএনপিতে নেই। তারা বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের কেউ নন।
সেই নির্দেশনা মতে নেতাকর্মীরা জনসচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ ও কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।' তিনি আরও বলেন, 'আমি চরফ্যাসনের স্থানীয় সন্তান এবং রাজপথে বহু আন্দোলন সংগ্রাম করে হামলা-মামলার স্বীকার হয়েছি। বর্তমানে কেন্দ্রীয় যুবদলের নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমি আশা করি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তথা দলের সর্বোচ্চ কমান্ড এসব বিষয় নিশ্চয়ই বিবেচনা করবেন।
আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। দল এ আসনে অবশ্যই আমাকে মনোনয়ন দিবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তাছাড়া আমি চরফ্যাসনে বিএনপির কোনো প্রতিহিংসার রাজনীতি বা গ্রুপ চাইনা। আমরা দলের স্বার্থে সবাই ঐক্যবদ্ধ এবং নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছি। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার হয়েই আমরা আগামীতে কাজ করবো।'
মেসেঞ্জার/সাইফুল/তারেক