ঢাকা,  শুক্রবার
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

কয়রায় ব্যবসায়ীর পা ভেঙে দিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ২১:৩২, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কয়রায় ব্যবসায়ীর পা ভেঙে দিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা

ছবি : মেসেঞ্জার

খুলনার কয়রায় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় ব্যবসায়ীর পা ভেঙে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় কয়রা থানার ওসি তদন্ত শাহ আলম উপস্থিত ছিলেন।

আহত ব্যবসায়ীকে প্রথমে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।পরবর্তীতে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পা ভেঙে যাওয়া ওই ব্যবসায়ীর নাম মুনছুর আলী।তিনি কয়রা বাজারের মায়ের দোয়া মেসিনারিজের মালিক।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব নুরুল আমিন বাবুল দলবল নিয়ে কয়রা বাজারের কপোতাক্ষ কলেজের সামনে আসেন। ওই স্থানে কয়রা বাজারের ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং এর মালিক মনিরুজ্জামানকে ডেকে নেন।

এসময় উভয়ের মধ্য কথা কাটাকাটি শুরু হয়।কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বিএনপি নেতা রবিউল ইসলাম ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামানের উপর চড়াও হন। ওই সময় ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান ও বিএনপি নেতা রবিউল ইসলামের মধ্য মারধরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় প্রথমে বিএনপি নেতা রবিউল ইসলাম আহত হন। 

এই খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়রা উপজেলা বিএনপির পার্টি অফিস থেকে আরও বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী ঘটনা স্থলে এসে ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামানকে মারধর শুরু করে। মনিরুজ্জামানকে বাঁচাতে তার চাচা ব্যবসায়ী মুনছুর আলী, চাচাতো ভাই আল মামুন,ভাই মিলন এগিয়ে আসেন। এসময় তাদেরকে বেধড়ক মারপিট করেন বিএনপি নেতা কর্মীরা। এতে ব্যবসায়ী মুনছুর আলীর পা ভেঙে যায় এবং আল মামুন ও মিলন গুরুতর আহত হন। তাদেরকে উদ্ধারপূর্বক কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করা হয়। 

ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান বলেন, (১৪ সেপ্টেম্বর) বিএনপির আহবায়ক এ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলামের নেতৃত্বে কালনা মাদ্রসার মাঠে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য বিরোধী শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত হয়েছিলাম। উক্ত অনুষ্টানে আমি কেন গিয়েছিলাম এই বিষয় নিয়ে কয়রা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব নুরুল আমিন বাবুল আমাকে শাষান। 

আজ সকালে ওই একই বিষয় নিয়ে আমাকে ফোনে হুমকি ধামকি দেয়। তিনি এসময় আরও বলেন যদি তুই আর এ্যাডভোকেট মোমরেজ সাহেবের সাথে রাজনীতি করিস তাহলে কয়রা বাজারে ব্যবসা করতে পারবি না। কয়রা বাজারে ব্যবসা করতে চাইলে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে। এটার প্রতিবাদ করায় তার লোকজন নিয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সহ আমাদের পাশাপাশি ৫ টা দোকানে হামলা ও ভাংচুর চালায়। এই ঘটনায় আমার ছোট চাচা ব্যবসায়ী মুনছুর আলীর পা ভেঙে গেছে এবং আমার ছোট ভাই মিলন ও চাচাতো ভাই আল মামুন গুরুতর আহত হয়েছেন।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব নুরুল আমিন বাবুল বলেন, জলিল শেখ ও আয়ুব ঢালীর  সাথে জমাজমি ও টাকা নিয়ে মনিরুজ্জামানের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিষয়টা নিয়ে আজ উভয় পক্ষের সম্মতিতে মিমাংসার জন্য বসাবসির কথা ছিল কিন্তু মনিরুজ্জামানরা হাজির না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়।

কথা বলার মধ্য আমার উপর তারা ক্ষিপ্ত হয়। পরে আমি ওই স্থান থেকে চলে আসি। পরবর্তীতে তারা  আওয়ামী ষ্টাইলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সংঘবদ্ধ হয়ে কপোতাক্ষ কলেজের সামনে জড়ো হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে হাজির হয়।

এক পর্যয়ে উভয় পক্ষের মধ্য মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। চাঁদার বিষয়টি জানতে চলে তিনি বলেন এই ধরনের কোন কথায় হয়নি। এটা সম্পুর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্য করার জন্য এই ধরনের মিথ্যা বানোয়াট কথা ছাড়াচ্ছে। 

কয়রা থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ শাহ-আলম বলেন, দুপুরে কযরা কপোতাক্ষ কলেজের সামনে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্য মারামারি ঘটনা ঘটে। আমি ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়োনত্রনের চেষ্টা করি। তবে এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ব্যপারে  এখনো কোন অভিযোগ পায়নি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছ।

মেসেঞ্জার/কামাল/তারেক

×
Nagad