ছবি : ডেইলি মেসেঞ্জার
দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে প্রকল্পের অধীনে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকদের গত ৫১ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ সহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিতের দাবিতে নরসিংদী জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫ টায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দলোনের ব্যানারে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীকে তার কার্যালয়ে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেতন বঞ্চিত শিক্ষকদের পক্ষে জেলা প্রশাসককের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে ২০১২ এবং ২০১৪ সালে "স্কিলস এন্ড ট্রেইনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট" শীর্ষক প্রকল্পে অধীনে দেশের ৪৯ টি পলিটেকনিক এবং মনোটেকনিক ইনস্টিটিউটে ১০১৫ জন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়। যাদের মধ্যে ৭৩৮ জন বর্তমানে বিভিন্ন ইন্সটিটিউটে কর্মরত রয়েছেন। তাদের দাবি ২০১৯ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ থেকে তাদের পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হলেও তাদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বন্ধ করে দেয়া প্রকল্পটি।
শিক্ষার্থীদের দাবি এসব শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণ ও রাজস্বভুক্ত করাসহ গেলো ৫১ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা।
নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার এন্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ হাসান বলেন, " গত ৩ বছর ধরে দেখছি আমাদের ক্লাসে শিক্ষকরা নিয়মিত পড়াচ্ছেন। আমার পড়াশোনা শেষের দিকে এসে জানতে পারলাম তাদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষক কোনো ধরনের বেতন পান না। বেতন ছাড়া তাদের পরিবার কিভাবে চালানো সম্ভব। ৫১ মাস ধরে শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন না, এটা সম্পূর্ণ অমানবিক কাজ। আমি চাই তাদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান করে শিক্ষা ও গবেষণায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে সহযোগিতা করা হোক"
একই প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন সোহান বলেন, "গত ৫১ মাসের বেতনাদি প্রদানসহ তাদের স্থায়ী নিয়োগ দেয়া হোক। আমরা মানবিক কারণে তাদের পক্ষে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি, দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।"
নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ নীহার রঞ্জন দাস বলেন, "আমাদের ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের ৩০ জন শিক্ষকের মধ্যে ৬ জন শিক্ষক গত ৫১ মাস ধরে কোনো বেতন পাচ্ছেন না। তারা অর্থ কষ্টে অমানবিক জীবন যাপন করছেন। যেহেতু আমাদের শিক্ষকদের পদ শূন্য রয়েছে, তাদেরকে সে পদে নিয়োগ দেয়া হোক।"
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, " আমরা জানি প্রকল্পের নির্দিষ্ট একটি মেয়াদ থাকে। প্রকল্পের মেয়াদ হয়ে গেলে বেতনাদি পাবেন না, এটা স্বাভাবিক ঘটনা। যদি কাজ চালিয়ে দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়, তাহলে শিক্ষকদের বেতনসহ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সকল সুবিধা অবশ্যই পাবেন। আমি এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মেসেঞ্জার/সজিব