ছবি : মেসেঞ্জার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিয়ে (৪ আগস্ট) গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবধা গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে নয়ন ইসলামের দাফন সকালে সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে নামাজে জানাজা শেষে দক্ষিন গোবধা গ্রামে শ্বশুর বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে নিহতের মরদেহ দাফন করা হয়।
এর আগে (২১সেপ্টেম্বর) শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার ও রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে দু’দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। (৪ আগস্ট) রাজধানীর কাঁঠালবাগান এলাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শুক্রবার রাতে সেখানেই মারা যান তিনি।
নয়ন রাজধানীর কাঁঠাল বাগান এলাকার একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজে কাজ করতেন। তাঁকে আদিতমারী উপজেলা যুবদলের দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ৪০নং সদস্য বলে দাবি করেছে আদিতমারী উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব একেএম হাসানুল হক বান্না।
নয়নের জানাজায় আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-ই-আলম সিদ্দিকী, অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম কামাল, জামায়াত নেতা মওলানা আব্দুল হালিম, বিএনপির নেতা ছালেকুজ্জামান প্রামানিকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।
২৬ বছর বয়সী নয়ন ইসলাম। গ্রামে কখনো কৃষি শ্রমিকের কাজ করেছেন, কখনওবা করেছেন বাসের হেলপারি। আবার রিক্সাও চালিয়েছেন। সর্বশেষ কাজ করছিলেন রাজধানীর কাঁঠালবাগান এলাকার একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজে। এই অবস্থায় (৪ আগস্ট) রাজধানীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
এরপর ওইদিনই তাঁকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রায় দেড় মাস মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শুক্রবার রাতে ওই হাসপাতালে মারা গেলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর খবরে পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে নয়নের মৃত্যুর খবরে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তাঁর স্ত্রী।
কান্না ছড়িয়েছে স্বজন ও প্রতিবেশিদের অনেকের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শোক প্রকাশ করছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরাসহ অনেকে। নয়ন মিয়াকে দূর্গাপুর ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বলে দাবি করেছে যুবদল।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবধা (সত্য মঙ্গলের কোর্ট) গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে নয়ন ইসলাম। বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজন বছর দেড়েক আগে খ্রীস্টান ধর্ম গ্রহণ করায় স্ত্রীকে নিয়ে একই গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে চলে যান নয়ন। সেখানে স্ত্রী ও তিন বছর বয়সী মেয়েকে রেখে ঢাকায় কাজ করতেন তিনি। অন্য ধর্ম গ্রহণ করায় বাবা-মায়ের সাথে তাঁর যোগাযোগ ছিল না বলে জানা গেছে।
দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আমিনুল হক জানান, নয়ন এক সময় তাদের গরুর খামারে কাজ করতেন। এই অবস্থায় তাঁর (আমিনুল) ভাই এরশাদুল হকের মেয়ে রিপা আক্তারের সাথে প্রায় চার আগে বিয়ে হয় নয়নের। (৪ আগস্ট) মিছিলে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।
মেসেঞ্জার/লাডলা/তারেক