ঢাকা,  শনিবার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

বিএনপিতে জড়িত থাকায় পদোন্নতি বঞ্চিত বাকৃবি প্রকৌশলী

ময়মনসিংহ ব্যুরো

প্রকাশিত: ১৬:২৬, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিএনপিতে জড়িত থাকায় পদোন্নতি বঞ্চিত বাকৃবি প্রকৌশলী

ছবি : মেসেঞ্জার

ছাত্রজীবনে প্রকৌশলী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (১৯৮৮-৮৯) নির্বাচিত ভিপি হন। চাকুরী জীবনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শাখায় যোগদানের পর নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে পর্যায় উন্নয়ন প্রাপ্ত হন ২০১০ সালে। বিগত ১৪ বছরেও পরবর্তী পর্যায়ে উন্নয়ন তাকে হতে দেয়া হয়নি। বৈষম্যের শিকার প্রকৌশলী মোস্তাফিজ তার ন্যায্য প্রাপ্তি আদায়ের জন্য বাকৃবি উপাচার্য সহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 

বিভিন্ন সূত্র জানায়, চরম বৈষমের শিকার সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) হিসাবে যোগদানকারী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করছেন না বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২৫.৪.২০০৬ তারিখে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান উন্মুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সকলশর্ত পূরণ করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) হিসাবে প্রকৌশল শাখায় যোগদান করেন।

এর পূর্বে একই শাখায় সহকারী প্রকৌশলী (এষ্টিমেটিং) হিসাবে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান কর্মরত ছিলেন। যথাযথ নিয়মে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে ১৭.১.২০১০ তারিখে নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) হিসাবে পর্যায়উন্নয়ন পান। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়উন্নয়ন নীতিমালায় সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য কমপক্ষে ২টি আপগ্রেডেশনের নীতিমালা চালু রয়েছে।

ইতিমধ্যে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ১ম আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে নির্বাহী প্রকৌশলী হওয়ার অর্থাৎ ১৭.১.২০১০ তারিখের পরে যোগদানকারী সকল কর্মকর্তাগন উচ্চতর পদে অবস্থান করছেন। এতে তার অধীনে যোগদানকারী কর্মকর্তাদের নীচে সিনিয়রিটি চলে যাওয়ায় চরম বৈষমের শিকার হয়ে মানসিক যন্ত্রনার শিকার হয়েছেন। মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ১ম শ্রেনীর কর্তকর্তা হিসাবে যোগদান করা সত্বেও ২য় শ্রেনীতে যোগদানকারী কর্মকর্তাগন তার উপর জৈষ্ঠতা পেয়েছে এতে চাকুরীর শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছে। এ ব্যাপারে কমপক্ষে ৫বার আবেদন করার পর ও কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন নাই।

অভিজ্ঞার আলোকে যে সমস্ত ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ সরাসরি সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে যোগদান করে থাকেন তাদের ব্যাপারে আপগ্রেডেশনের নীতিমালায় কোন বক্তব্য না থাকায় নবম গ্রেডের যোগদানকারী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ২য় পর্যায়উন্নয়ন না পেয়ে চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।

এ ব্যাপার প্রশাসনের সকল পর্যায়ে আবদন ও আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে কারণ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি (৮৮-৮৯) এবং এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম ছাএ নেতা। মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ৩০ বৎসর যাবত বাকৃবিতে অফিসার হিসাবে কর্মরত রয়েছেন চাকুরীর অভিজ্ঞার কাল বাকৃবিতে প্রকৌশল শাখায় সবচেয়ে বেশী হওয়া সত্বেও জেষ্ঠতার দিক থেকে সে সবার নীচে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে তাকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে মনে করেন এই ভুক্তভোগী।

নির্বাহী প্রকৌশলী মুস্তাফিজুর রহমান পর্যায়উন্নয়ন বঞ্চিত হওয়ার কারণে গঠিত কমিটির আহবায়ক ও বাকৃবি কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডঃ সাইদুর রহমান জানান, 'দুই বছর পূর্বে কমিটি হয়েছে। কমিটির একটি সভাও হয়েছে। এখন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এই বিষয়টি নিয়ে উপাচার্যের সাথে কথা বলব। তার নির্দেশনা অনুসারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে কমিটির আহবায়ক নিশ্চিত করেছেন।'

প্রকৌশলী মুস্তাফিজুর রহমান বিএনপি'র রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত থাকার কথিত অভিযোগে তিনি পদোন্নতি পাননি এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ.কে ফজলুল হক ভূঁইয়া জানান, বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যর শিকার হয়েছে, তাদের ব্যাপারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি বলেন আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে চাই।

মেসেঞ্জার/নজরুল/তারেক

×
Nagad