ঢাকা,  শনিবার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় কাউন্সিলরের উপরে হামলা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:০৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় কাউন্সিলরের উপরে হামলা

ছবি : মেসেঞ্জার

শীর্ষ মাদক কারবারি শিল্পী খাতুনের মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেওয়ায় অস্ত্রধারীদের হামলার শিকার হয়েছেন সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হোসেন আলী। দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রের হামলায় অল্পের জন্য তিনি প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বৃষ্টির সময়ে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার চক কোবদাসপাড়ার আবুল হোসেনের ইটভাটা এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিন তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে এই এলাকায় আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। দফায় দফায সংঘর্ষে এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ীঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।  

স্থানীয় জহুরা বেগম, মারজিয়া বেগম শেরজাহান বেগম, সবুজ শেখ, কোরবান আলীসহ একাধিক নারী ও পুরুষরা জানান, চক কোবদাসপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা করে আসছে শিল্পী খাতুন নামের এক নারী। এতে এলাকার যুবকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ মাদকে জড়িতে হয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়ছে।

মাদক বিক্রির কারণে প্রতিদিনই এলাকার ঝগড়া-বিবাদ ও চুরি-ছিনতাই বেড়ে চলেছে। মাদক ব্যবসা বন্ধের জন্য স্থানীয় কাউন্সিলর হোসেন আলীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কয়েকবার উদ্যোগ নেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাদক ব্যবসায়ী শিল্পী খাতুন, তার ছেলে মেরাজ গংরা কাউন্সিলরসহ তাদের নানাভাবে হয়রানী ও প্রাণনাশের হুমকি দিতেন।

এরই এক পর্যায়ে (৫ আগস্ট) সরকার পতন হলেই কাউন্সিলর হোসেন আলীর কাছে চাঁদা দাবি করেন শিল্পী খাতুনের ছেলে মেরাজ গংরা। তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মেরাজের নেতৃত্বে শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় লিটনের ছেলে বাঁধন, আলামিনের ছেলে জুবায়েল, দত্তবাড়ি এলাকার রাকিব, মনসুরের ছেলে তানজির, সাবানের ছেলে শফিক ও হারান সেখের ছেলে সোহেলসহ অজ্ঞাত আরও ১০/১৫ জনের অস্ত্রধারী দল কাউন্সিলর হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়।

এ সময় জীবন বাঁচাতে পুরাতন মৌসুমী ইটভাটার ভেতরের পুকুরে ঝাপ দেয় কাউন্সিলর হোসেন আলী। এ সময় পুকুরের ভেতরেই এলোপাথারীভাবে অস্ত্র দিয়ে হোসেনকে কোপানোর চেষ্টা করলে তার আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়।

এতে জীবন রক্ষা পায় হোসেন আলী। খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানেও কাউন্সিলর হোসেন আলীর বাড়ীসহ অন্যান্য বাড়ীতে ব্যাপক হামলা ও ভাংচুর করে ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে শিল্পী খাতুনের ছেলে মেরাজ গংয়ের অস্ত্রধারীরা।

এ বিষয়ে সাবেক কাউন্সিলর হোসেন আলী জানান, শিল্পী খাতুন দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায় জড়িত। তিনি যখন ধানবান্ধি এলাকায় ছিলেন সেখানেও মাদক ব্যবসা করতো। এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে শিল্পীকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করলে চক কোবদাসপাড়া এলাকায় এসে বাড়ী করেন। এরপর এখানেও মাদক ব্যবসা শুরু করলে এলাকার যুবক সমাজ ধ্বংস হয়ে পড়ছে।

নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মাদক বন্ধের জন্য শিল্পীকে চাপ দিয়েছি। এতে তিনি ও তার ছেলে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছে। সরকার পতন হওয়ার পর থেকেই তার ছেলে মেরাজ গংরা আমার কাছ থেকে চাঁদাসহ আমাকে হত্যার জন্য নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল।

শুক্রবার আমাকে হত্যার জন্য হামলা চালিয়েছে। আমি বাঁচার জন্য পুকুরে ঝাপ দিয়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাদের প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমার জীবন রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীসহ পুলিশ প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। বর্তমানে ঐ এলাকায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, হামলার ঘটনাটি মাদক ব্যবসার কিনা তা জানি না, অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মেসেঞ্জার/রাসেল/তারেক

×
Nagad