ঢাকা,  শুক্রবার
২২ নভেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

শিক্ষার্থীদের ‘দ্বিতীয় মা’ জসিন্তা ক্যান্সারে আক্রান্ত

নেই চিকিৎসা খরচ!

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:০৭, ২ অক্টোবর ২০২৪

শিক্ষার্থীদের ‘দ্বিতীয় মা’ জসিন্তা ক্যান্সারে আক্রান্ত

ছবি: মেসেঞ্জার

জসিন্তা পিউরিফীকেশন। তবে ষাটোর্ধ্ব এই নারীকে ‘জয়ন্তী মাসী’ বলেই চেনেন সবাই। করতেন একটি স্কুলে আয়ার চাকরি। মাতৃসুলভ আচরণের কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে ছিলেন তাদের ‘দ্বিতীয় মা’। নিজের দুঃখ-কষ্টকে চেপে রেখে সবার প্রিয়মুখ হয়ে ওঠা জসিন্তা পিউরিফীকেশন সম্প্রতি অবসরে গেছেন।

ভেবেছিলেন অবসরজীবনটা উপভোগ করবেন। কিন্তু জসিন্তা পিউরিফীকেশন এখন ক্যান্সার নামক মারণ রোগের সাথে যুদ্ধ করছেন। টাকার অভাবে সময়মতো দিতে পারছেন না কেমোথেরাপী। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পাবনার চাটমোহর উপজেলার উথূলী গ্রামের জসিন্তা পিউরিফীকেশন। 

সরেজমিন জানা যায়, প্রায় ৪০ বছর আগে জসিন্তা পিউরিফীকেশনকে ছেড়ে চলে যান স্বামী অতুল রোজারিও। ৪ কন্যা ও এক ছেলে সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন জসিন্তা। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতে থাকে তাদের। মানবিক বিবেচনায় জসিন্তা পিউরিফীকেশনকে স্থানীয় ‘সেন্ট রীটাস্ উচ্চ বিদ্যালয়ে’ আয়া পদে চাকরি দেন তৎকালীন স্কুল প্রশাসক। 

অনেক কষ্টের মাঝেও একে একে চার মেয়েকে বিয়ে দেন জসিন্তা। ভেবেছিলেন জীবন সায়াহ্নে এসে একমাত্র ছেলে দেখভাল করবেন! কিন্তু ছেলেও এখন খোঁজ নেন না। টিনের জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস এই বৃদ্ধার। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অবসরে যাওয়া জসিন্তা পিউরিফীকেশন অতিসম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঢাকার একটি বে-সরকারি হাসপাতালে দেখান তিনি। পরীক্ষা-নীরিক্ষায় জরায়ুতে ক্যান্সার ধরা পড়ে জসিন্তা পিউরিফীকেশনের!

‘শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় মা’ জসিন্তা পিউরিফিকেশন তার জমানো প্রায় দুই লাখ টাকা ইতোমধ্যেই চিকিৎসায় ব্যায় করে ফেলেছেন। অবশিষ্ট আর কোনো টাকা নেই অসহায় এই বৃদ্ধার কাছে। চিকিৎসক তাকে দ্রুত কেমোথেরাপী দিতে বলেছেন। এরপর করতে হবে অস্ত্রোপচার। এরজন্য প্রয়োজন দুই থেকে তিন লাখ টাকা। কিন্তু বিশাল অঙ্কের চিকিৎসার এই টাকা নেই জসিন্তা পিউরিফীকেশনের কাছে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা এই অসহায় বৃদ্ধা সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

জসিন্তা পিউরিফীকেশন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘জীবনটাই গেল কষ্ট করতে করতে। সবসময় মনে করেছি এই বুঝি সুখ আসবে! কিন্তু সুখ আমার কপালে জোটেনি। এখন আমি নিরুপায়! ক্যান্সারের চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য নেই আমার। আমাকে বাঁচান আপনারা।’

সেন্ট রীটাস্ স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শেখ সজিব এই প্রতিবেদককে বলেন, স্কুলে যখন পড়ালেখা করেছি তখন মায়ের মমতা দিয়ে আমাদের আগলে রাখতেন মাসী (জসিন্তা পিউরিফীকেশন)। আমরা তাকে আমাদের দ্বিতীয় মা ভাবতাম। মাসী ক্যান্সারে আক্রান্ত শোনার পর খুব কষ্ট পেয়েছি। তিনি খুব দরিদ্র মানুষ। আশা করবো সবাই মাসীর চিকিৎসায় এগিয়ে আসবেন। 

এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিম বলেন, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতা করা হয়। সমাজসেবা অফিসে আবেদন করতে বলেন। আমি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখব।

প্রয়োজনে জসিন্তা পিউরিফীকেশনের সাথে এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন- ০১৭১৭-২০৮৬৬৮
 

মেসেঞ্জার/পবিত্র/আজিজ