ঢাকা,  শনিবার
২৩ নভেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

বরগুনায়

বাজার সমিতি নির্বাচনী জেরে ইউপি সদস্যের বাড়িতে ভাঙচুর

বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ৩ অক্টোবর ২০২৪

বাজার সমিতি নির্বাচনী জেরে ইউপি সদস্যের বাড়িতে ভাঙচুর

ছবি: মেসেঞ্জার

বরগুনার তালতলী বাজার সমিতি নির্বাচনে হেরে গিয়ে পরাজিত প্রার্থী দলবলসহ জনৈক ইউপি সদস্যের বসতবাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও লুটতরাজের অভিযোগে বরগুনা দ্রুত বিচার আদালতে ১৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটতরাজের শিকার বড়বগী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম খান লিটু বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর সিআর ১৬৭/২০২৪ তারিখঃ- ০২/১০/২০২৪, ধারাঃ- আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন (দ্রুত বিচার) আইন ২০০২ এর ৪/৫ ধারা।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে আসামিরা তালতলী বন্দরের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। ২৮ সেপ্টেম্বর তালতলী বাজার সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে মোঃ শাহারিয়ার আহম্মেদ নাঈম হেরে যাওয়ায় তার পিতা মোঃ শহিদুল হক বাদীকে বলে তোর বিরোধিতার কারণে আমার ছেলে হেরে গেছে। তাই নির্বাচনে খরচ হওয়া টাকা দিতে হবে। ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসামিরা বাদীর বাসায় ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। 

তালতলী বন্দরে অবস্থিত বাদীর  বসত ঘরের সামনে পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা আসামীরা বাদীকে খুন করার উদ্দেশ্যে ড্যাগার, রামদা, ছেনা প্রভৃতি দেশিয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে ত্রাস সৃষ্টি করে আসামি ফোরকানের নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরা একজোট হয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাদীর বাড়িতে এসে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। এ টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামীরা ত্রাস সৃষ্টি করে বাদীর উপরে হামলা চালায়।

বাদীর স্ত্রী ও মা প্রাণ বাচাঁনোর জন্য ডাক চিৎকার দিলে এলাকার লোকজন এসে আসামিদের কবল থেকে বাদীকে উদ্ধার করে এবং আসামিদের প্রতিহত করে। এক পর্যায় আসামি ফোরকান ও ছোট্টকে এলাকার জনগণ গণপিটুনি দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ ও নৌবাহিনী ঘটনা স্থলে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায়। ঐদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় আসামিরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বসতঘরে অনঅধিকার প্রবেশ করে পুরনায় ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।

বাদী টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামী শহিদুল হক বাদীর স্ত্রীর নিকট হতে জোরপূর্বক আলমিরার চাবি নিয়ে ঘরের মধ্যে থাকা স্টিলের আলমিরা খুলে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা, আসামি মোঃ শাহারিয়ার আহম্মেদ নাঈম দুইটি দুই ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, আসামি মোঃ ইনজামুল হক অন্তু এক ভরি ওজনের ১ জোড়া কানের ঝুমকা বালা, ৪ ও ৬নং আসামি মোঃ ফোরকান ও মোঃ নিজাম হাং দুই ভরি ওজনের হাতের দুইটি রুলি নিয়ে যায়।

আসামিরা বাদীর বসতঘরের মধ্যে থাকা ৪০টি চেয়ার, ১টি টেবিল, ১টি আলমিরা, ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং ঘরের সামনের দোকান কুপিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় খুন জখমের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।

মামলার আসামিরা হলো তালতলী বন্দরের মৃত: শামসুল হকের পুত্র মোঃ শহিদুল হক (৫৪), মোঃ শহিদুল হকের পুত্র মোঃ শাহারিয়ার আহম্মেদ নাঈম (২৮), মোঃ শহিদুল হকের পুত্র মোঃ ইনজামুল হক অন্তু (২৩), মালিপাড়ার মোঃ সোবাহানের পুত্র মোঃ ফোরকান (৪০), শাহ-আলমের পুত্র মোঃ মিজানুর রহমান ওরফে টাচ মিজান (২৮), বড় অংকুজান পাড়ার মোঃ সুলতান হাওলাদারের পুত্র মোঃ নিজাম হাং (৩২), মালিপাড়ার মোঃ সেকান্দার কসাইর পুত্র মোঃ আল-আমিন (৩২) ও মোঃ রাকিব (২৮), তোতা মিয়ার পুত্র মোঃ বশির (২৪)

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলো শাহ-আলমের পুত্র মোঃ ইমরান (২৫), মোয়াপাড়ার মৃত: শামসুল হকের পুত্র মোঃ ছোট্ট মিয়া (৪৬), মালিপাড়ার মোহাম্মাদের পুত্র সাইমুল ইসলাম সাদ্দাম (২২), মোঃ শাহজালাল উদ্দিনের পুত্র মোঃ শাহাদাত (২৮), মোঃ সেকান্দারের পুত্র মোঃ জুলহাস (৩০), মৃত: কাছেম মল্লিকের পুত্র মোঃ সেকান্দার (৫১), তালতলী পাড়ার মোঃ খবির উদ্দিন হাওলাদারের পুত্র মোঃ ছগির হাং (৫০), কবিরাজপাড়ার মৃত ময়জদ্দিন প্যাদার পুত্র মোঃ মাসুদ প্যাদা (৫০), সহ আরও অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন।

মেসেঞ্জার/হিমাদ্রি/আজিজ