ঢাকা,  শনিবার
০৫ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

হাতিয়ায় বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে জমি দখল সহ চাঁদাবাজির অভিযোগ

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ৫ অক্টোবর ২০২৪

হাতিয়ায় বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে জমি দখল সহ চাঁদাবাজির অভিযোগ

ছবি : মেসেঞ্জার

জমি দখল, ঘাট বানিজ্য, শালিশ মিমাংসার নামে টাকা আত্মসাৎ, হাট-ঘাট সহ বিভিন্ন নিরীহ সাধারণ মানুষ থেকে চাঁদা আদায় সহ মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে।

জানা যায়, মোহাম্মদ আলী সোনায়িা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হওয়ার পর সরকার বিরোধী বা কোন ধরনের দলীয় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত না থাকলেও সরকার পতনের পর নিজের অবস্থান জানান দিতে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন করা ব্যক্তিদেরকে অর্থের বিনিময়ে আশ্রয় প্রশ্রয় সহ নানান সুযোগ সুবিধা দিয়ে নিজের বলয় সৃস্টি করছেন। চাঁদাবাজি, জমি দখল সহ নানান অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন তিনি।

চরচেঙ্গা টু চেয়ারম্যানঘাট নৌ রুটে আগে যারা যাত্রী পারাপারে বোট চালাতো তাদের মধ্যে তাহের মাঝি সহ কয়েকজন থেকে দপে দপে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, ভয়ে কেউ মুখ না খুললে ও তাহের মাঝির থেকে ৩ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি জানাযানি হয়ে যায়।

সব শেষে ঘাটে প্রভাব বিস্তার করে অন্য সকল বোট বন্ধ করে দিয়ে তিনি সহ কয়েকজন মিলে একটি বোট নামিয়েছেন। সে সাথে বাজার নিয়ন্ত্রনে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি বাহিনী গড়ে তুলেছেন এই মোহাম্মদ আলী।

বিএনপির একাধিক নেতা কর্মী জানান, বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় প্রভাবশালী আয়োমীলীগ নেতাদের সাথে আতাত করে উপজেলা বিএনপির সদস্য হুমায়ুন, সোনাদিয়া ইউনিয়ন দক্ষিন শাখা ছাত্রদলেরর সভাপতি অমিত হাসান মান্না, বিএনপির কর্মী জামাল উদ্দিন, সোনাদিয়া ইউনিয়ন দক্ষিন শাখা ছাত্র নেতা নোমান, হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্র দলের যগ্ম আহবায়ক নুরুল্লাহ সৈকত এবং তার পরিবার সহ অনেক বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে। এখনো তার মতের বাহিরে কথা বললে মামালা হামলার ভয় দেখায়।

উপজেলা বিএনপির সদস্য হুমায়ুন বলেন, মোহাম্মদ আলী সোনাদিয়া ৭নং ওয়ার্ডের চৌরাস্তা বাজারের দক্ষিণ পশ্চিম পাশে মীরে গো বাড়ির পারিবারিক বিবাদকৃত জমি দখল করে চাষাবাদ করেন। এছাড়াও সে বিভিন্ন মানুষ থেকে নিরবে চাঁদাবাজি করে যচ্ছে। এই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ তার কাছে জিম্মি। ভয়ে কেউ কিছু বলতে পরেনা। তার বিরুদ্ধে ২০২০ সালে সোনাদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক সহ অনেকে উপজেলা সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সোনাদিয়া ইউনিয়ন দক্ষিন শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আকবর হোসেন শের আলী বলেন, সে ঘাট বানিজ্য, শালিশ মিমাংসার নামে টাকা আত্মসাৎ, হাট-ঘাট সহ বিভিন্ন নিরীহ সাধারণ মানুষ থেকে চাঁদা আদায় সহ মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষদের হরয়রানি করে। তার এ সকল অন্যায় অনিয়ম নিয়ে কথা বলায় সে আমাকে অন্য লোকদিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়, আমি বুধবার হাতিয়া থানায় একটি জিডি করেছি, জিডি নং-৮০।

অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটা পক্ষ বানোয়াট মিথ্যা প্রচারনা চালাচ্ছে। আমি কখনোই এসব অনিয়মের সাথে জড়িত ছিলাম না। হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল উদ্দিন রাশেদ বলেন, সোনাদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযোগ আসছে। জেলাতে ও এ বিষয়ে অভিযোগ গিয়েছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমাকে অভিযোগগুলো তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

এই বিষয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবদুর রহমান বলেন, এই বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত কোন অভিযোগ না আসলেও মোবাইলে অনেকে জানিয়েছে। আমি হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক সহ কয়েকজনকে খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য বলেছি।

তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আগামী সপ্তাহে আমি সহ জেলা বিএনপির টিম হাতিয়া সফরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশ যারা সাধারণ মানুষের আস্থা এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা।

মেসেঞ্জার/রাসেল/তারেক

×
Nagad