ঢাকা,  মঙ্গলবার
২২ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

মোংলা বন্দরের সিবিএ অফিস জবর দখলের অভিযোগ

মোংলা প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৬:২২, ৮ অক্টোবর ২০২৪

মোংলা বন্দরের সিবিএ অফিস জবর দখলের অভিযোগ

ছবি : মেসেঞ্জার

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মচারী সংঘ (সিবিএ) অফিস সন্ত্রাসী কায়দায় জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সাধারণ কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। যে কোন সময় পরিস্থিতি অবনতির আশংকা দেখা দিয়েছে।

বন্দরের সাধারণ কর্মচারী ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘ (রেজিঃ নং খুলনা/ ১৯৫৭) হচ্ছে মোংলা বন্দরে চাকরিজীবি শ্রমিক কর্মচারীদের সিবিত্র প্রতিষ্ঠান। প্রায় আট শতাধিক শ্রমিক কর্মচারী এ সংগঠনের সদস্য।

২০২১ সালের (১৭ সেপ্টেম্বরে) সংগঠনটির দ্বি বার্ষিক সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় পরও আদালতে মামলাসহ নানা জটিলতায় এখন পর্যন্ত নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ আওয়ামী সরকার পতনের পর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে সংগঠনটিতে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। 

এ অবস্থার মধ্যে সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বন্দরের জুনিয়র অফিসার ও সাবেক সিবিএ'র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ নেতৃত্ব দিয়ে তার অনুসারীদের নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় সিবিএ অফিস দখল করে নেয়।

এরপর সে বর্তমান নির্বাহী পরিষদের নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি ধামকী প্রদান করে। এ সময় ফিরোজ তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে সিবিএ অফিসে ঘন্টাখানেক অবস্থান করে উচ্চস্বরে নিজেকে ওই সংগঠনের আহবায়ক হিসেবে দাবি করেন। 

এক পর্যায়ে সে সাধারণ সম্পাদকের জন্য নির্ধারিত চেয়ারে বসে তার অনুসারীদের নিয়ে একটি কথিত সভা শেষে নাস্তা খেয়ে আনন্দ উল্লাস করেন। ফিরোজের এমন আচরণে সিবিএর বর্তমান নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ কর্মচারীগণ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।

এদিকে বর্তমান সিবিএর পক্ষ থেকে সোমবার (৭ অক্টোবর) পাঠানো মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছে এক চিঠিতে এসব বিষয়ে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, জুনিয়র অফিসার ফিরোজ তাঁর বর্তমান কর্মস্থল সিভিল ও হাইড্রোলিক বিভাগে নিয়মিত অফিস করেন না।

অফিস চলাকালীন সময়ে সে নিজ দায়িত্ব পালন না করে প্রায় সময় তার উচ্ছৃংখল সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে নিজ ব্যবহৃত বিলাশ বহুল "টয়োটা এলিয়ন" গাড়ীসহ অফিস চত্বর এলাকায় অযথা ঘোরাঘুরি করেন। ফলে অফিসে স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্টসহ আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ফিরোজের বিভিন্ন অনৈতিক বেআইনী কর্মকান্ড ও অফিস শৃংখলা পরিপন্থী কাজ করার কারণে বিভিন্ন সময়ে বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করার তিনি দিনদিন বেপোরোয়া হয়ে উঠেছেন।

ফিরোজের এসব অবৈধ ও বেআইনী কর্মকান্ড থেকে বিরত করা না হলে ভবিষ্যতে মোংলা বন্দর অস্থিতিশীল ও অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা প্রকাশ করে ওই চিঠিতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো পত্রে দাবি জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে জুনিয়র কর্মকর্তা মো. ফিরোজ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় সাধারণ কর্মচারীরা সভা করে এডহক কমিটি করে তাকে আহবায়ক বানিয়েছেন। বিধি অনুযায়ী তিনি সিবিএ অফিসে সভা করতে গেলে উদ্ভুদ পরিস্থিতিতে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তাদের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা দিলে তারা তা পালন করেন।

অপরদিকে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কিবরিয়া হক জুনিয়র অফিসার ফিরোজের বিরুদ্ধে বর্তমান সিবিএ নেতৃবৃন্দের দেয়া অফিস দখলসহ অন্যান্য অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মেসেঞ্জার/হাসান/তারেক