ঢাকা,  বুধবার
০৯ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

দূর্গাপূজায় দুইশত শিশুকে নতুন জামা উপহার দিল শিশুস্বর্গ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ৮ অক্টোবর ২০২৪

দূর্গাপূজায় দুইশত শিশুকে নতুন জামা উপহার দিল শিশুস্বর্গ

ছবি : মেসেঞ্জার

হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজায় দুইশো শিশুকে নতুন জামা ও নতুন টাকার নোট উপহার দিলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন শিশুস্বর্গ। দূর্গাপূজার একদিন আগে নতুন জামা ও টাকা উপহার পেয়ে হাসি ফুটেছে ওইসব শিশুদের মুখে। 

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে জেলার বোদা উপজেলার বেংহারী ইউপির অন্তর্গত বোয়ালমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পূজার নতুন জামা তুলে দেন পঞ্চগড় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব ফরহাদ হোসেন আজাদ।

রওশনআরা মেমোরিয়াল এন্ড শিশুস্বর্গের বিদ্যানিকেতনের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম শফিকুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহীন, বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান খান বাবলা, সিনিয়র সাংবাদিক হোসেন রায়হান, বোয়ালমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিরশ চন্দ্র সরকার ও শিশুস্বর্গের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক কবীর আহমেদ আকন্দ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আকরাম হোসেন জাকারিয়া।

অতিথিরা বক্তব্যে বলেন, সম্প্রীতি বাংলাদেশের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীর শারদীয় দূর্গাপূজা। এ উৎসবে কোমলমতি শিশুদের মধ্যে আনন্দ বাড়িয়ে দিতে দূর্গাপূজার একদিন আগে নতুন জামা ও নতুন টাকা উপহার দেয়ার উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। শিশুস্বর্গ দীর্ঘ সময় ধরে উত্তরের সীমান্ত জনপদ পঞ্চগড়ের অসহায়, হতদরিদ্র শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে আসছে। আশা করছি শিশুরা পুজোর নতুন জামা ও টাকা পেয়ে আমাদের ঈদের আনন্দের মতো তারাও দূর্গাপূজার আনন্দ করবে। 

শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবীর আহমেদ আকন্দ বলেন, শিশুরা হচ্ছে আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যত। সেই শিশুদের নিয়ে কাজ করছে আমাদের শিশুস্বর্গ। আমরা ২০০৯ সাল থেকে সীমান্তের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ শুরু করেছিলাম। একে একে পনেরটি বছর ধরে কাজ করে আসছি।

এ বছর দূর্গাপূজায় দুইশত শিশুকে নতুন জামা ও নতুন টাকা দিতে পারলাম। যদিও প্রাথমিকভাবে কয়েকজনকে দিতে চেয়েছিলাম। বিষয়টি জানতে পেরে আমার কর্মস্থল এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের উধ্বর্তন কর্মকর্তার সহায়তায় পুজায় শিশুদের আনন্দ বাড়িয়ে দিতে দুইশত শিশুকে নতুন জামা দিতে পেরেছি। যারা সহযোগিতা ও অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আগামীতেও এ ধরণের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সাল থেকে দেশের উত্তরের প্রান্তিক অঞ্চলে অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কাজ করে আসছে জাহাঙ্গীরনগর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশন। শিশুস্বর্গ প্রতিষ্ঠা করে জাবিয়ান কবীর আহম্মেদ আকন্দ।

তার হাত ধরেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের ঝরে পড়া সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে বদলে দিয়েছে শিক্ষার পরিবেশ। শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশনের শিক্ষাবৃত্তিতে পড়ালেখা করছে ৬৫ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ২৫ জন শিক্ষার্থী দেশের নামদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে।

অনেকে বিদ্যাপাঠ শেষ করে প্রবেশ করে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। সংগঠনটি শীতবস্ত্র, শিক্ষাবৃত্তি, স্বল্প শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান, নারীদের স্বনির্ভরতা গড়ে তুলতে প্রশিক্ষন, শিক্ষার্থীদের আইটি প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে আসছে। মাধ্যমিক স্কুল হিসেবে রওশন আরা মেমোরিয়াল শিশুস্বর্গ বিদ্যালয় চালু, পাঠাগার, নারী উন্নয়ন প্রশিক্ষণ চালু করেছে শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশন।

মেসেঞ্জার/দোয়েল/তারেক