ছবি : মেসেঞ্জার
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এই শারদীয় দূর্গাপূজা। বুধবার (৯ অক্টোবর) থেকে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসবের মন্ডপে মন্ডবে চলছে ষষ্ঠী পূজার সঙ্গে ঢাকের বাদ্য ও শঙ্খধ্বনি। পূজা উৎসব ঘিরে মন্ডপে মন্ডপে দেবী দুর্গার আরাধনার সঙ্গে উৎসব আনন্দমুখর করে তোলার নানান আয়োজন।
সকালে বেশ কয়েকটি পূজা মন্ডবে গিয়ে দেখা যায় রংতুলির আঁচড়ে নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রতিমাগুলোকে। পূজা ঘিরে সাজানো হয়েছে মন্ডপের প্যান্ডেলগুলো। দোকানপাট বসতে শুরু করেছে।
তেঁতুলিয়ার পূজামন্ডবের সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চন কুমার দেব জানান, এবার দূর্গাপূজা ঘিরে জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছেন প্রশাসন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোও স্বেচ্ছাসেবী দিতে কথা বলেছেন। আশা করছি, আমরা ভালোভাবে আনন্দ উৎসবপূর্ণভাবে পূজা উৎসব পালন করতে পারবো।
পঞ্চগড়ে এবার ২৯৯টি পূজামন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গাপূজা। দূর্গাপূজা উৎসব ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ। জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্ডপে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে থাকবে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
প্রতিটি মন্দিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। দুর্গাপূজার মন্ডপগুলোর মধ্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ৭৮টি ও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় ৮০টি মন্ডপ রয়েছে। এসব মন্ডপগুলোতে নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনে নিরাপত্তায় নিশ্চিতে পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক কাজ করবেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, ও আনসার সদস্যরা। এবার মন্ডপে আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথে মন্ডপ পাহাড়ায় কাজ শুরু করেছেন ১৯৫০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো থেকে প্রতিটি পূজো মন্ডবে দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবক। বিএনপি ও জামায়াত মন্ডপে মন্ডবে তাদের স্বেচ্ছাসেবী দেয়ার কথা জানা গেছে।
দূর্গাপূজা উদযাপন মন্ডপগুলোতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় ও মতবিনিময় করতে দেখা গেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্মকর্তাদের। ইতিমধ্যে পূজার তিনদিন আগে জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে পূজামন্ডব কর্তৃপক্ষ ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় ও মতবিনিময় করেছে পঞ্চগড়-১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়ন।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক বলেন, ইতোমধ্যেই পঞ্চগড় সদর উপজেলা, আটোয়ারী ও তেঁতুলিয়া উপজেলায় সীমান্তের ৮ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা সকল পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিজিবি মোতায়েন সম্পন্ন করা হয়েছে।
(৫ অক্টোবর) থেকে নিরাপত্তা টহল পরিচালনা করা হচ্ছে। এবারের পূজায় বিজিবি সীমান্তবর্তী উপজেলায় বসবাসরত নাগরিকদের নির্বিঘ্নে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপনে সহায়তা করবে। পূজা চলাকালীন বা পূজা শুরুর পূর্বে দুষ্কৃতিকারী বা অপশক্তির উপস্থিতি টের পেলে সাথে সাথে বিজিবি'র টহল কমান্ডারকে মোবাইলের মাধ্যমে অবগত করার জন্য সংশ্লিষ্ট পূজা মন্ডপ কমিটির সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ও পূজা উৎসব যেন সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে পালন করতে পারে সেজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ও সাধারণ জনসাধারণকে সজাগ দৃষ্টি ও সার্বিক সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন।
জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, শারদীয় দূর্গাপূজা সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। এ উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে সবধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রদানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা পর্যায়েও কন্ট্রোল রুম, ট্যাগ অফিসার নিযুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিটি পূজামন্ডপে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক কাজ করবেন পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনী, র্যাব ও আনসার সদস্যরা। আর জেলা ও উপজেলায় বিশেষ কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে। যাতে কোথাও কোন সমস্যা হলে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া যায়। সবদিক থেকে বলা যায় জেলায় দূর্গাপূজা উদযাপনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সর্বজনীন এ উৎসব হিন্দুধর্মাবলম্বীরা নির্বিঘ্নে উদযাপন করবেন।
মেসেঞ্জার/দোয়েল/তারেক