ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:৫২, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ

ছবি : মেসেঞ্জার

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ২১দফা দাবিতে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জে এম আই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা। এ সময় আন্দোলনের কারণে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে মালিক পক্ষের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেয়ায়, প্রায় সাড়ে ৪ ঘন্টা পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয় শ্রমিকা পরে যানজট স্বাভাবিক হতে শুরু করে সড়কে। এরআগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। 

বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৮টায় কাজে যোগ না দিয়ে ভিটিকান্দি এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে ১৫শত এর বেশি শ্রমিক। এ সময় কোম্পানির পক্ষ থেকে কয়েকজন আন্দোলনকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করলে তাদেরকে ধাওয়া দেয় শ্রমিকরা।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করতে ব্যর্থ হলে, পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কুহিনূর আক্তার এসে মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে শ্রমিকদের দাবী মেনে নেওয়া আশ্বাস দেন এরপর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। 

এর আগে আন্দোলনকারীরা জানান, বিভিন্ন কারণে কোম্পানিটিতে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এর মধ্যে (১০ অক্টোবর) কোম্পানি কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়। শ্রমিকদের অভিযোগ, সেদিন সরকারি ঘোষণা উপেক্ষা করে বন্ধের দিন কারখানা খোলা রাখা এবং একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ছুটি না দিয়ে তার সাথে উল্টো খারাপ আচরণ করা হয়।

এরপর দীর্ঘসময় অতিবাহিত হওয়ার পরও তাকে হাসপাতালে না নিয়ে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। এতে অসুস্থ অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় মারা যায় সেই শ্রমিক। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের মধ্যে ইয়াসিন ও হালিম মিয়া বলেন, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করে তা অমানবিক। সরকারি নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা করে না তারা। জোর করে শ্রমিকদের ওভারটাইম করতে বাধ্য করা হয়। অসুস্থ হলে হাসপাতালে যেতে দেওয়া হয় না। বিভিন্ন কারণে বাধ্য হয়ে ২১দফা দাবি নিয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।

আমাদের কাজ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। বেঁধে দেওয়ার সময়ের ভেতরে নির্দিষ্ট পরিমাণ কাজ না করতে পারলে বেতন কাটা হয়। সরকারি ছুটি এমনকী ঈদের সময়ও আমরা ছুটি পাই না। এরকম অমানবিক নিয়ম অন্য কোনো কোম্পানিতে আছে কিনা আমরা জানি না। দীর্ঘদিনের সঞ্চিত ক্ষোভে আজ আমরা বাধ্য হয়ে পথে নেমেছি।

এ সম্পর্কে জানতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মাসুম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জেএমআই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে কর্মরত শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো আমরা মেনে নিয়েছি। ফলে শ্রমিকদের আন্দোলনের কোন যৌক্তিকতা নেই।

বিষয়টি নিশ্চিত করে, গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনূর আক্তার জানান, শ্রমিকরা ২১দফা আন্দোলনে মহাসড়ক অবরোধ করলে বিষয়টি আমি জানতে পারলে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসে মালিক পক্ষের সাথে কথা বলি। পরে মালিক পক্ষ শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবী গুলো মেনে নেন। এতে দুপুরের দিকে শান্ত হয়ে কাজে ফিরেছেন আন্দোলনকারী শ্রমিকরা।

মেসেঞ্জার/শুভ/তারেক