ঢাকা,  বুধবার
১৬ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

শহীদ আফনানের মায়ের আকুতি

খুনিরা এখনো বাইরে, আমার ছেলে শুয়ে আছে কবরে

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

খুনিরা এখনো বাইরে, আমার ছেলে শুয়ে আছে কবরে

ছবি : মেসেঞ্জার

লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ সাদ আল আফনান এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত ফলাফলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ১৭ পেয়েছেন তিনি। জেলার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন আফনান। ফলাফলে সন্তুষ্ট হলেও তাঁকে বিদেশে পড়ালেখা করানোর স্বপ্ন অধরা রয়ে গেল মায়ের। আফনান লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাস টার্মিনাল এলাকার মৃত সালেহ আহমেদের ছেলে।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকালে নিহত আফনানের মা নাছিমা বেগম নিজেদের বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে ছেলের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল দেখিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে যুবলীগের নেতা-কর্মীদের গুলিতে সাদ আল আফনান নিহত হয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন নাছিমা বেগম। তিনি বলেন, জড়িতরা এখনো বাইরে রয়েছেন। অথচ ছেলে কবরে শুয়ে আছে। অনতিবিলম্বে সাবেক জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুসহ খুনিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানাই।

নাছিমা বেগম বলেন, এইচএসসি পাশ করার পর আফনান বিদেশে পড়ালেখা করে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করবে। পাশাপাশি দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে এই স্বপ্ন ছিল আমাদের। আফনান ঠিকই এইচএসসি পাশ করছে। কিন্তু বিদেশে আর পড়ালেখা করা হয়নি। সব আশা-ভরসা শেষ হয়ে গেছে। এখন আর কেউ রইল না। আফনান নিহত হওয়ার তিন মাসে আগে বিদেশে মারা যান তাঁর বাবা।

আফনানের সহপাঠী ও শিক্ষকেরা জানান, আফনান পরীক্ষায় পাস করেছে। সে বেঁচে নেই। কিন্তু তাঁর সবকিছু তাঁদের কাছে বেঁচে আছে। আফনান তাঁদের মাঝে সারা জীবন বেঁচে থাকবে। ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ বলেন, সাদ আল আফনান ছিল ক্লাসের সবচেয়ে মেধাবী ও নম্র-ভদ্র শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরে প্রথম নিহত হয় আফনান। তবে আফনান মারা গেলেও সে আমাদের মাঝে চিরদিন অমর হয়ে থাকবে।

প্রসঙ্গত, (৪ আগস্ট) জেলা শহরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় ও তমিজ মার্কেট এলাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে প্রকাশ্যে এ কে এম সালাউদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় সাদ আল আফনানসহ চার শিক্ষার্থী নিহত ও দুই শতাধিকেরও বেশি গুলিবিদ্ধ হন।

মেসেঞ্জার/শিবলু/তারেক