ঢাকা,  বুধবার
১৬ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

বেনাপোল দিয়ে এলো ৮০৬ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ

আমদানি স্বাভাবিক, তার পরও কমছেনা কাঁচা মরিচের দাম 

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:১০, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

বেনাপোল দিয়ে এলো ৮০৬ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ

ছবি : মেসেঞ্জার

আমদানি স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলসহ স্থানীয় সব খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কেজিতে ১৫০-২০০ টাকা। কারণ হিসেবে দুর্গা পূজার জন্য টানা ৫দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। তবে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে এমন দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আমদানি বাড়লেও আড়তে তেমন কমেনি কাঁচা মরিচের দাম। টানা ৫দিন বন্দর বন্ধ থাকবে জেনে কাঁচামাল গুদামজাত করে দাম বৃদ্ধি করেছেন আড়তদাররা।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকালে বেনাপোল ও শার্শার একাধিক বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও এই সব বাজারে ভারত থেকে আমদানিকৃত কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি। আজ তা বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪০০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে, বেনাপোল বন্দরে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে কাঁচা মরিচের আমদানি। সোমবার (১৪ অক্টোবর) একদিনে ৫০ ট্রাকে ৫৮২ টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ১২ ট্রাকে ১৪৪ টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। বুধবার ৫টা পর্যন্ত ৫টি ট্রাকে ৮০ টন কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয়।

আমদানিকৃত এ কাঁচা মরিচের ক্রয় থেকে শুরু করে শুল্ককরাদি সব মিলিয়ে খরচ পড়ছে ৯৬-১০০ টাকা কেজিতে। অথচ যশোরের শার্শা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকা কেজি দরে। বেনাপোল বাজারে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা জাবির হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগেও মরিচ কিনেছিলাম ৯০ টাকা কেজি। আজ দেখছি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। এভাবে চললে আমরা চলব কি করে ?

আরেকজন ক্রেতা মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকার বাসিন্দা। শুনছি এবং দেখছি, এই বন্দরে প্রচুর কাঁচা মরিচ আমদানি হচ্ছে। সেই হিসেবে তো ১০০ টাকার নিচে দাম হওয়ার কথা। অথচ এখনো আমাদের ৩৫০-৪০০ টাকা কেজিতে কাঁচা মরিচ কিনে খেতে হচ্ছে।

বেনাপোল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী রাশেদ আলী বলেন, বেশি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। সব সবজি এবং পেঁয়াজের দাম ও আকাশ ছোয়া। তবে পূজার কারনে পোর্ট বন্ধ থাকায় বাজারে বড় বড় ব্যবসায়ীরা বস্তা বস্তা কাঁচা মরিচ আর পেঁয়াজ মজুত করেছিল দাম বেশি পাবার আশায়। আমদানি স্বাভাবিক হলে আবার দাম কমে যাবে।

বেনাপোল বন্দরের পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, পেঁয়াজে তেমন পড়তা না থাকায় এখন কাঁচা মরিচ আমদানি করছি। বর্তমান কাঁচা মরিচ আমদানি অনেক বেশি হচ্ছে। বাজারে মূল্যবৃদ্ধির ভাবটা অচিরেই কেটে যাবে। তিনদিনে প্রায় ৬৭ ট্রাকে ৮০৬ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে এ বন্দরে দিয়ে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ইয়াসিন জানিয়েছেন, তারা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছেন। ক্রয়-বিক্রয় রশিদ, মূল্য তালিকা, বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কিনা সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মরিচের দামে কোনো কারসাজি হচ্ছে কিনা তাও যাচাই করা হবে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজিব নাজির জানান, ভারত থেকে তিনদিনে ৮০৬ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে এ বন্দরে দিয়ে। বন্দর থেকে খালাস করে নিয়ে যাচ্ছে আমদানিকারকরা। পচনশীল পণ্য হিসেবে আমরা দ্রুত খালাস দিয়ে থাকি। মূল্যের ব্যাপারে  আমাদের কিছ বলার নেই।

মেসেঞ্জার/জামাল/তারেক