ছবি : মেসেঞ্জার
পতিত আওয়ামী লীগ এর শাসন আমলে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে টিআর কাবিখা-কাবিটা প্রতিবন্ধী বিধবা ও বয়স্কভাতা জেলে কার্ড সহ বিভিন্ন সরকারি অর্থ অবৈধভাবে উত্তোলন করে আত্মসাৎ সহ এলাকায় লুট ভাংচুর অগ্নিসংযোগ খাল দখল জমি দখল দুর্নীতি সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন সহ বেপরোয়াা চাঁদা বাণিজ্য ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার অভিযোগ উঠেছে হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে।
তার এসকল অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে না পেয়ে তার পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এসময় তার এক ভাইকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বর্তমান প্রভাবশালী কিছু নেতার আশ্রয় পশ্রয় পেয়ে সে এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করছে।
হাতিয়া থানা সুত্রে জানা যায়, নুরুল আমিন বুড়িরচর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নুরুল ইসলামের ছেলে এবং একই ওয়ার্ডে কয়েকবার ইউপি সদস্য ছিলো। সে হাতিয়া থানায় কয়েকটি মামলায় এজহারভূক্ত আসামী।
এলাকাবাসী জানায়, ২০১৯ সালে সরকারের ত্রাণ তহবিল থেকে নদী ভাঙন প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন মানুষদের তালিকা করা হয়। ওই তালিকায় নাম অন্তভূক্তি করার জন্য অনেকের থেকে ৫ হাজার ১০হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। তার মধ্য থেকে ৬নং ওয়ার্ডের ৩২জনের নামে ঘর বাবদ প্রায় ৭৫ হাজার টাকা করে বরাদ্ধ আসে।
কিন্তু নুরুল আমিন মেম্বার কাউকে কোন টাকা দেয়নি। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার লোকজন মেম্বারকে প্রশ্ন করলে তিনি গড়িমসি করেন এবং বলেন এখনো কোন টাকা আসেনি, আসলে আপনারা পাবেন। এতে করে স্থানীয় মানুষদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নুরুল আমিন মেম্বার ৬নং ওয়াড়ের প্রায় ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার পরেও এলাকায় কোন উন্নয়নের ছিটেফোঁটা ও লাগেনি। সরকারি বরাদ্ধের টাকা, ভাতা কার্ড করে দেওয়া, ঘর করে দেওয়া, সালিশ মীমাংসা, নাগরিক সনদ দেওয়ার নামে সেবা প্রত্যাশীদের থেকে টাকা নেওয়া, টিআর, কাবিখা-কাবিটা, সরকারি চাউল আত্মসাৎ, সহ এমন কোন অপকর্ম নেই যে নুরুল আমিন মেম্বার করেনি।
কোন অবিভাবক মেয়ের বিয়ের সময় জন্মনিবন্ধনের জন্য গেলে বয়স কম আছে বলে অভিবাবকদের থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করতো। এসব দুর্নীতি অনিয়ম চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে তার ওয়ার্ডের লোকজন অতিষ্ঠ।
তার অপকর্মের বিষয়ে সাংবাদিক মামুন রাফী কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ করে। যার কারণে কয়েকবার তার পরিবার হামলা হুমকি এবং হমিলার শিকার হতে হয়েছে। সম্প্রতি তার ছেলে রাকিব উদ্দিন ও সবুজ নামের দুইজন মিলে বড়দেইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জেনারেটর চুরি করে সাগরিয়ায় একটি দোকানে বিক্রি করে দেয়, এই নিয়ে সাংবাদিক মামুন রাফীর ভাই সহ এলাকায় অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দেয়, যার কারনে ক্ষিপ্ত হয়ে রাতের অন্ধকারে সাংবাদিকের তিন ভাইয়ের উপর অতর্কিত হামলা করে, এই ঘটনায় নুরুল আমিন সহ ৭জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ রাতে নুরুল আমিন ও তার ছেলে রাকিবকে গ্রেপ্তার করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, আমাকে সরকারি ঘর দিবে বলে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমি কোন ঘর পাইনি। শুধু আমি না করে আরো অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। ভাতার কার্ড করে দিবে বলেও অনেকের থেকে টাকা নিয়েছে। আমি আমার টাকা ফেরৎ চাই এবং এর বিচার চাই। অন্য এক ভুক্তভোগী বলেন, এই মেম্বার আমার থেকে দারের কথা বলে ৫০ হাজার টাকা নেন আজকে ৭-৮ বছর হয়ে গেছে আমার টাকা দেয় না। টাকা চাইতে গেলে আমার হুমকি দেয়।
স্থানীয় জসীম ও সিরাজ উদ্দিন বলেন, বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিবে বলে আমাদের থেকে দুই হাজার টাকা করে নিয়েছেন। কাগজপত্র নিয়েছেন কিন্তু কার্ড করে দেন নাই। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই। শুধু জসীম ও সিরাজ উদ্দিন নয় এমন অনেকের অভিযোগ জেলে কার্ড, বয়স্ক ভাতা কার্ড, প্রতিবন্ধী কার্ড, ঘর নিয়ে দিবে বলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে ৫ হাজার, ১০ হাজার, ১৫ হাজার করে টাকা নিয়েছে। আমরা সবাই নুরুল আমিন মেম্বারের বিচার চাই এবং আমাদের টাকা ফেরত চাই।
অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল আমিনের সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শুভাগত বিশ্বাস এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি হাতিয়া উপজেলায় এসেছি বেশীদিন হয়নি, তাই এখানে কোন কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে তা আমার জানা নেই।
মেসেঞ্জার/রাসেল/তারেক