ঢাকা,  সোমবার
২১ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

কব্জির সাহায্যে লিখে বেরোবিতে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত মিনারার

চিলমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৩৮, ২০ অক্টোবর ২০২৪

কব্জির সাহায্যে লিখে বেরোবিতে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত মিনারার

ছবি: মেসেঞ্জার

হাতের কব্জির সাহায্যের লিখে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে  (বেরোবি) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন মিনারা। কিন্তু টাকার অভাবে মেধাবী ছাত্রী মিনারা খাতুনের শৈশব কালের সেই ইচ্ছা ভেস্তে যেতে বসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং পরের কয়েক বছর পড়ার খরচ জোগানোই এখন তাঁর মূল চিন্তা। মিনারার জন্ম থেকেই দুই হাতে কোন আঙ্গুল নেই। তবুও অদম্য ইচ্ছা শক্তি নিয়ে হাতের কব্জির সাহায্যে লিখতে শিখে।

মিনারা খাতুন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার কাঁচকোল দক্ষিণ বাঁধ এলাকার দিনমজুর মো. রফিকুল ইসলাম ও মৃত-মর্জিনা বেগমের মেয়ে। দুই বোনের মধ্যে মিনারা ছোট।

জীবন যুদ্ধে হারতে নারাজ মিনারার দুই হাতের আঙ্গুল না থাকলেও দুই হাতের কব্জির সাহায্যে লিখেই একে একে ৫ম শ্রেণীর সমাপনী (পিইসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) ও দাখিল পরীক্ষায় পাস করে এইচএসসিতে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হয়। ২০২২সালে কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হয়। এবারে দ্বিতীয় বারেরমতো রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পায় মিনারা। 

ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েও শুধুমাত্রা অর্থাভাবে স্বপ্নের বিদ্যাপিঠ বেরোবিতে ভর্তি হতে পারছে না মিনারা। ২১অক্টোবর বেরোবিতে ভর্তির শেষ দিন। ভর্তির শেষ তারিখ ঘনিয়ে আসলেও ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ যোগান দিতে না পেরে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে মিনারার পরিবার ।

মায়ের মৃত্যুর পর সাত বার নদীতে বাড়ী ভাঙ্গনের স্বীকার বাবা রফিকুল ইসলাম মিনারার খালাকে বিবাহ করেন। শারীরীক ভাবে মিনারা স্বাভাবিক থাকলেও তার দু’হাতে কোন আঙ্গুল নেই। দুই হাতের কব্জির সাহায্যে কলম ধরে সে এখন পর্যন্ত লেখা-পড়া চালিয়ে আসছে। 

বাবা রফিকুল ইসলাম দিনমজুর। নুন আনতে পানতা ফুরায়,অভাবের সংসার তার। নদী ভেঙ্গে পাউবো বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। হঠাৎ পাউবো বাঁধে আশ্রিতদের বাড়ী ভেঙ্গে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।পরের জায়গার আশ্রয় নিয়ে কোন রকমে পরিবার নিয়ে দিনাতিপাত তার।

সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে মাসিক ৬০০টাকা হারে বরাদ্দ হয় মিনারার নামে একটি প্রতিবন্ধি ভাতা। এ টাকায় চলতো তার লেখা-পড়ার খরচ। 

ভর্তির জন্য কুড়িগ্রাম কলেজে পূর্বের ভর্তি বাতিল করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে প্রায় ২০হাজার টাকা প্রয়োজন। এছাড়াও ভর্তি হয়ে শিক্ষা জীবনে বাকী পথ কিভাবে পাড়ি দিবে তা তার জানা নেই। মিনারার বাবা রফিকুল ইসলাম মেয়ের উচ্চ শিক্ষার জন্য সমাজের বিত্তবান ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সাহায্য সহযোগীতা কামনা করেছেন। যোগাযোগ-০১৭০৪-৩১১১৯২

মেসেঞ্জার/রাফি/ফামিমা