ঢাকা,  সোমবার
২১ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

১ মাসে সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের রেকর্ড

যশোর প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ২০ অক্টোবর ২০২৪

১ মাসে সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের রেকর্ড

ছবি : মেসেঞ্জার

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রাজস্ব আয়ের রেকর্ড ভেঙে রেকর্ড তৈরি হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে ৩৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৩০ টাকা রাজস্ব জমা হয়। যা ছিলো ১ মাসে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়ের রেকর্ড। এর আগে ১ মাসে এত পরিমাণে টাকা জমা হয়নি। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদের সততা ও জবাবদিহিতার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ, এক্সরে বিভাগ, সিটিস্ক্যান বিভাগ, আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগ, ইসিজি বিভাগ, বহিঃবিভাগ, জরুরি বিভাগ, কেবিন ভাড়া, পেইং ওয়ার্ড ভাড়া, করোনারি কেয়ার ইউনিটের ইসিজি বিভাগ, ইকো বিভাগ, অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ও টিকিট কাউন্টার থেকে থেকে রাজস্ব জমা হয়েছে ৩৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৩০ টাকা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্যাথলজি বিভাগ থেকে ১০ লাখ টাকা, টিকিট কাউন্টার বিভাগ থেকে ৫ লাখ টাকা, সিটিস্ক্যান বিভাগ থেকে ৫ লাখ টাকা ও এক্সরে বিভাগ থেকে ৪ লাখ টাকা।  

সূত্রটি আরও জানায়, ডা. দিলীপ কুমার রায় তত্ত্বাবধায়ক থাকাকালীন ২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত রাজস্ব আযের পরিমান ছিলো ১ কোটি ৭ লাখ টাকা। ২০২১ সালের (১ জুন) হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদান করেন ডা. আখতারুজ্জামান। সেই থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত হাসপাতালে রাজস্ব আয় হয়েছিলো ১ কোটি ৯১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।

জানা গেছে, হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. ইয়াকুব আলী আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি ক্যাশ কাউন্টার চালু করার অনুমোদন মেলে। তিনি ক্যাশ কাউন্টারে কার্যক্রম চালুর জন্য নিজস্ব অর্থায়নে দুটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার মেশিন কিনে দেন।

কিন্তু (১৫ জানুয়ারি) তার কর্মজীবন শেষ হওয়ায় পূর্নাঙ্গভাবে কার্যক্রম চালু করতে ব্যর্থ হন। পরে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ সাহা। কিন্তু তিনি চেষ্টা করেও ক্যাশ কাউন্টার চালু করতে পারেননি।

২০১৮ সালের (৭ এপ্রিল) ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করে ক্যাশ কাউন্টার চালুর জন্য জোরালো ভূমিকা নেন। ২০১৯ সালের (৫ জুলাই) হাসপাতালের সেন্ট্রাল ক্যাশ কাউন্টারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য্য।

এরপর হাসপাতালের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার টাকা ক্যাশ কাউন্টারের মাধ্যমে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেন কর্তৃপক্ষ। তারপরেও গোপনে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা ক্যাশ কাউন্টারের রশিদ ছাড়াই করা হতো। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার বিশ্বাস আর্থিক স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করেও সফল হননি।

২০২১ সালের (১২ মে) তিনি চাকরি থেকে আনুষ্ঠানিক অবসর গ্রহণ করেন। ওই বছরের (১ জুন) তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদান করেন ডা. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। তিনি যোগদানের পর থেকেই আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে জোরালো ভূমিকা পালন করেন। সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা ক্যাশ কাউন্টারের রশিদের মাধ্যমে করার নির্দেশনা জারি করেন।

জোরালো তদারকি ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা করার কারণে আর্থিক দূর্নীতি কমতে শুরু করে। একই সাথে বাড়তে থাকে সরকারের রাজস্ব আদায়। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদের সময়ে এক মাসে রাজস্ব আয় বেড়ে দাড়িয়েছে ৩৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৩০ টাকা।

এই বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, তিনি যোগদানের পর প্রথম মিশন ছিলো আর্থিক দুর্নীতি বন্ধ করা। যে ক্যাশ কাউন্টারের রশিদ ছাড়া কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করার নির্দেশ দেয়া হয়। জোরদার করা হয়েছে তদারকি ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা। প্রতি মাসে রাজস্ব আয়ের নতুন রেকর্ড তৈরি হওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি সফলতা পেয়েছেন। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন সব কিছুর উপরে সততা।

মেসেঞ্জার/বিল্লাল/তারেক