ছবি: সংগৃহীত
যশোরের বেনাপোলের রঘুনাথপুরে বুদো সরকার, আব্দুল্লাহ ও আজগর হত্যা মামলায় একই পরিবারের চার ভাইসহ
পাঁচ আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত।
রোববার (২০ অক্টোবর) যশোরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম দুই আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিপি এম ইদ্রিস আলী।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, চার ভাই বেনাপোলের রঘুনাথপুর গ্রামের নাসির উদ্দিন নাসু, ফুলছদ্দিন ওরফে কটা, আলাউদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন ও একই গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে ঈমান আলী। এছাড়া এ মামলায় ওই চার ভাইয়ের বাবা আব্দুর রহমানকে খালাশ প্রদান করেছে আদালত।
আদালত ও মামলা সুত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে বেনাপোলের রঘুনাথপুরে ব্যাপক ঝড় হয়। এতে রাস্তার বিভিন্ন গাছ উপড়ে পড়ে। তা বিক্রি করে এলাকার মসজিদের ফান্ডে জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্থানীয় দুইপক্ষের মধ্যে মতবিরোধ হয়। ২৪ এপ্রিল সকালে গাছের ডাল কাটতে আসে ওই এলাকার নছু, আলাউদ্দিনসহ আরো কয়েকজন। এ সময় আরেকপক্ষ আব্দুল্লাহ, বুদোসহ অন্যরা এসে ওই গাছ কাটতে নিষেধ করে। বলে তোমরা গাছ কেটোনা ওই গাছ কেটে বিক্রি করে মসজিদ ফান্ডে দিব।
এসময় নছু, আলাউদ্দিনরা বলে ওই গাছ কি তোর বাপের। যা ইচ্ছে তা করবি। এরপর উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে রুপ নেয়। আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আব্দুল্লাহ, বুদো, আজগার, সুমনসহ আরও কয়েকজন গুরুতর জখম করে। পরে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে হাসতাপালে নেওয়ার পথে মারা যায় আবদুল্লাহ। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যায় বুদোও। অন্যদিকে, ঢাকাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে ঢাকাতে মারা যান আজগর। এরপর নিহতদের স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত আসামিদের ৩টি বসত বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এঘটনায় নিহত আব্দুল্লার ভাই আব্দুল খালেক বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় ওই ছয়জনসহ সালমান শাহ নামের আরেক যুবককে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন পোর্ট থানার এসআই দীন মোহাম্মদ। পরে তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই শরীফ হাবিবুর রহমান।
তিনি তদন্ত শেষে ওই সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। মামলা বিচারচলাকালীন সময়ে সালমান শাহ কে অব্যাহতি দেয়া হয়। অপর ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হয়।
রোববার এ মামলার রায় ঘোষনার দিনে দুই আসামি আলা উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিনের উপস্থিতিতে আদালত পাঁচজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড এবং একজনকে খালাশ প্রদান করে।
মেসেঞ্জার/জামাল/আজিজ