ঢাকা,  মঙ্গলবার
২২ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার 

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ২১ অক্টোবর ২০২৪

আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

ছবি : মেসেঞ্জার

ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়াসহ তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন জেনারেশন নেক্সট লিমিটেড নামের একটি তৈরী পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।

সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল ত্রিমোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এর আগে সকাল ৮টার দিকে আশুলিয়ার গোরাট এলাকায় কারখানার সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বাইপাইলে অবস্থান নেন শ্রমিকরা।

সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে তারা। এতে নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও।

অবরোধের মুখে মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন সড়ক ব্যবহারকারী লক্ষাধিক মানুষ।

খবর পেয়ে জেলা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করলেও তাতে সায় দেননি শ্রমিকরা। শ্রমিকদের অনড় অবস্থানের মুখে এক পর্যায়ে শিল্প পুলিশ ও সেনা সদস্যরা নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নেন।

শ্রমিকরা জানান, বেতন বকেয়া থাকায় তারা বাড়ি ভাড়াসহ মুদি দোকানদারের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষকে বেতন প্রদানে বাধ্য করার লক্ষ্যে তারা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।

শ্রমিকরা আরও জানান, এর আগে সার্ভিস বেনিফিট ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে বার্ডস গ্রুপের শ্রমিকরা লাগাতার অবরোধ করলে টানা ৫২ঘণ্টা বন্ধ থাকে মহাসড়কে যান চলাচল। এমন পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ মালিককে কারখানায় ধরে এনে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ নেয়। তাদের দেখাদেখি আমরাও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছি।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের অভিযোগ, তিন মাস থেকে কোনো বেতন বোনাস পায়নি তারা। বেতন না দিয়ে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে কয়েকবার মালিকপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। বারবার আশ্বাস দিলেও তারা বেতন পরিশোধ করেনি। তিন মাস অতিবাহিত হলেও বেশিভাগ শ্রমিক বেতন বোনাস পায়নি। কারখানার স্টাফদের বেতন বকেয়া আছে চার থেকে পাঁচ মাসের।

তারা বলেন, আমরা বিজিএমইএ ও শ্রম মন্ত্রণালয়ে গেলে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেয়। তবে এখন পর্যন্ত কারখানা খুলে দেয়নি, বেতন ও বোনাস পরিশোধ করেনি। তিন মাস ধরে পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। বাসা ভাড়া ও দোকান বাকি থাকায় অনেকটাই না খেয়ে দিন পার করছি।

কোথাও চাকরি নিতে পারছি না। এক মাসের বেতন বোনাস পরিশোধ না করেই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। সেপ্টেম্বর মাসে বিজিএমইএ ও শ্রম মন্ত্রণালয় আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। কিন্ত তিন মাসের বেতন এখনো পরিশোধ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে মহাসড়কে এসেছি। বেতন না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।

অবরোধের বিষয়ে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, (৫ আগস্টের) পর দাবি আদায়ে মহাসড়ক অবরোধ করাটাই নিয়মে পরিণত হয়েছে। এরা জেনারেশন নেক্সট লিমিটেড কারখানার শ্রমিক। কেউ দুইমাস, কেউ আরো বেশি মাসের বেতন পায়নি।

আমরা শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তারা কর্ণপাত করছেন না। যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনায় এনে অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেছেন সেনা সদস্যরাও। তাতেও সায় দেয়নি শ্রমিকরা। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের ধৈর্য ধারণ করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলছে।

মেসেঞ্জার/নোমান/তারেক