ছবি: মেসেঞ্জার
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বাজারের পশ্চিম পাশে একব্যক্তির টিন শেডের খাবার হোটেল দখল করে মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে।
এ ঘটনায় ওই হোটেলের মালিক রেজাউল করিম তালুকদার নাজু মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলামসহ দুই জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই বিএনপি নেতা কালাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেনের অনুসারী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রেজাউল করিম তালুকদার ৪০ বছর ধরে মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশে টিনের শেডে খাবার হোটেলের ব্যবসা করছেন। দেশের চলমান পরিস্থিতির সুযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে সাড়ে ৯টার দিকে মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ও সাজ্জাদুল ইসলাম বাবলু হোটেলে এসে রেজাউল করিম তালুকদারের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান রেজাউল করিম। জাহিদুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে রেজাউল করিম তালুকদারকে জোর করে তার হোটেল থেকে বের করে দেন। তারা হোটেলে তালা ঝুলিয়ে রেজাউল করিম তালুকদারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। হোটেলের ভেতর রেফ্রিজারেটর, চেয়ার, টেবিল ও ফ্যানসহ আনুমানিক দেড় লাখ টাকার মালামাল রয়েছে। এসব আসবাবপত্রসহ হোটেল জবর-দখল করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের পাশে ওই হোটেলের পেছন দিকে মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টাঙানো। সামনের দিকে হোটেলের কাঠামো করা ছিল। হোটেলের সামনের অংশ বন্ধ ছিল।
মাত্রাই বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, রেজাউল করিম তালুকদার দীর্ঘদিন খাবার হোটেলের ব্যবসা করছেন। ৮ থেকে ৯ মাস ধরে অসুস্থতার কারণে হোটেলটি বন্ধ রেখেছিলেন। হোটেলের জায়গাটি তার নিজের নয়। এটি মাত্রাই হাটের জায়গা। গত ৫ আগস্টে পর জাহিদুল ইসলাম ও তার লোকজন হোটেলটি দখল করেন। এরপর হোটেলে মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন। এখন সেখানে নিয়মিত বিএনপির দলীয় লোকজন বসছেন।
রেজাউল করিম তালুকদার নাজু বলেন, আমি কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমার বয়স এখন প্রায় সত্তরের কাছাকাছি। নিজেও শারীরিকভাবে অনেকটা অসুস্থ। হঠাৎ করেই জাহিদুল আমার হোটেল জবর-দখল করেছেন। তিনি কিছুদিন আগে আমার হোটেলে মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন। জাহিদুল তার দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে আমার হোটেলে নিয়মিত বসে মিটিং করছেন। আমি আমার হোটেল ফেরত চাই। কিন্তু প্রশাসন তেমন ভূমিকা নিচ্ছে না।
চাঁদা দাবির বিষয়টি সত্য নয় দাবি করে জাহিদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে হোটেলের জায়গাটিতে বিএনপির লোকজন বসতো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর জায়গাটিতে হোটেল করা হয়েছে। অনেক দিন ধরে হোটেল বন্ধ রয়েছে। সেই জায়গাটি নেওয়ার জন্য হোটেলের মালিকের কাছে গিয়ে সব জিনিস সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। তিনি সরিয়ে নিয়েছেন। পরে জায়গাটিতে কার্যালয় করা হয়েছে।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মেসেঞ্জার/রমি/আজিজ