ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

ভূতুড়ে হয়ে পড়ে আছে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘মুজিব কিল্লা’

রিপন ইসলাম শেখ, নীলফামারী

প্রকাশিত: ১৪:২০, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

আপডেট: ১৪:৪৬, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

ভূতুড়ে হয়ে পড়ে আছে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘মুজিব কিল্লা’

ছবি : মেসেঞ্জার

নীলফামারীতে ঘূর্ণিঝড় ও নদীভাঙনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় তিস্তার চরাঞ্চলের মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ছাতুনামা গ্রামে মুজিব কিল্লা নির্মাণ করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। ২০২২ সালে ১৩ অক্টোবরে ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুভ উদ্ধোধন করেন। কিন্তু উদ্ধোধনের পর থেকে কাজে আসছে না এই কোটি টাকা আশ্রয় কেন্দ্র।

ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এটি বি-টাইপের স্থাপনা। আয়তন ৯ হাজার ৩০০ বর্গফুট। প্রকল্পের নাম ‘মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’। উদ্দেশ্য, দুর্যোগকবলিত এলাকার জনসাধারণ ও তাদের পরিবারের জীবনরক্ষা, মূল্যবান দ্রব্য সামগ্রী নিরাপদে সংরক্ষণ এবং দুর্যোগে আক্রান্ত গৃহপালিত প্রাণীর নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করা। স্বাভাবিক সময়ে এর বহুমুখী ব্যবহার করা যাবে। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, খেলার মাঠ ও হাটবাজার হিসেবে ব্যবহার করা, কমিউনিটির উন্নয়নের লক্ষ্যে বৈঠক-সভার আয়োজন করা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের স্থান ও অস্থায়ী সেবাকেন্দ্র হিসেবে এটি ব্যবহারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ছাতুনাম মৌজায় দুই কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ছাতুনামা মুজিব কিল্লা। স্থানীয় সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার এটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। কাজটি বাস্তবায়ন করছে মেসার্স হায়দার এন্ড কোং নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বন্যায় খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নে ৫টি গ্রাম পানি বন্দি হলেও কাজে আসছে না কোটি টাকার ব্যয়ের নির্মিত এই আশ্রয় কেন্দ্র।

স্থানীয় বাসিন্দা সজল ইসলাম জানান, মুজিব কি কিল্লার পূর্ব দিকে বাহির হওয়ার জন্য সিড়ি করলেও নির্মাণ হয়নি কোনো রাস্তা। একটি চিকন আইল(ঘাটা) থাকলেও সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া চারপাশে আবাদি জমি আর ধান ক্ষেত। এখানে সোলার ও ব্যাটারীসহ ১৪টি ফ্যান বরাদ্দ থাকলেও সেখানে ৬টি ফ্যান লাগানো হয়েছে। বাকি ফ্যান দেখ ভালের জন্য যারা ছিল তারা নিয়ে গেছে। দু’মাস আগে স্টোর রুমে থাকা সোলার ব্যাটারী চুরি হলে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য মিলে উদ্ধার করেন। সেগুলো এখন সেই ইউপি সদস্যর কাছে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, এতো টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হওয়া কিল্লাটি বন্যা বা প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগে কেউ এখানে উপকৃত হচ্ছে না। কি কিল্লায় আসার মতো নেই কোনো যাতায়াতের রাস্তা। অবহেলায় আর অযত্নে ভূতুরে হয়ে পরে রয়েছে ৫বিঘা জমিতে নির্মিত এই ভবন। চরাঞ্চলের মানুষের জানমাল রক্ষায় নির্মিত এই মুজিব কিল্লা আদৌ টিকবে কি না তা নিয়ে আমরা সংশয়ে রয়েছি।

এবিষয় ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক জানান, সোলারের ব্যাটারী চুরি হয়েছে জানি না। তবে সেখানে থাকা পাইপ চুরি হয়েছে, সে বিষয়ে জানি।

কথা হলে জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (অ:দা:) কাশপিয়া তাসরিন জানান, মুজিব কিল্লা রয়েছে জানা আছে। মালামাল চুরি হয়েছে সে বিষয়ে জানা নেই। রাস্তা আছে কিনা তা জানি না? আমি নতুন অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি। তবে খোজ নিতে হবে। আপনার কোনো অভিযোগ থাকলে লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।

উপজেলা ত্রান ও পুনর্বাসন মেজবাহুর রহমান জানান, কিল্লার ব্যাটারী, ফ্যান চুরি হয়েছে কিনা তা জানিনা। তবে, ৫ তারিখে সেখানে ভাংচুর হয়েছে। বর্তমানে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছে।

মেসেঞ্জার/দিশা