ছবি : মেসেঞ্জার
যশোরের শার্শা উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের গৃহবধূ হালিমা দম্পতি যে কোনো ভাবে হোক তাদের সন্তানকে ফেরত চান। সন্তান না পেলে তারা বাঁচবেন না বলে তাদের আকুতি, প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা আমাদের সন্তান ফেরত চাই।
গাইবান্ধা সদরের গোবিন্দপুর নেকিরভিটা গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে হালিমা বেগম (২১)। পাঁচ বছর আগে যশোরের শার্শা উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের হতদরিদ্র বাবুরালী মোল্যার (২৫) সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুই বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
হালিমা দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হলে হতদরিদ্র স্বামীর বাড়ি থেকে সে বাপের বাড়ি গাইবান্ধায় চলে যায়। সেখানে তার প্রসব বেদনা উঠলে তার মা মোমেন বেগম গাইবান্ধা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করা দেন। দীনমজুরের স্ত্রী মোমেনা বেগম মেয়ের সিজার করানোর জন্য প্রতিবেশী রুবেল-হাসি দম্পতির কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেন।
চলতি বছরের (১৯ আগস্ট) হালিমা একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। সন্তান জন্মের পর বাচ্চাটিকে তার কোলে দেওয়া হয়। সন্তান পেয়ে হালিমা খুব খুশি হন। এদিকে সন্তান জন্মের দ্বিতীয় দিন থেকে শারিরীক দুর্বলতায় তিনি জ্ঞান হারান। পরে যখন তার জ্ঞান ফেরে তখন জানতে পারেন তার সন্তানকে একই গ্রামের রুবেল ও হাসি দম্পতি নিয়ে গেছে।
তিনি তখন সন্তানের শোকে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের স্মরণাপন্ন হন। চেয়ারম্যানের পরামর্শে গাইবান্ধা সদর থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ নবজাতককে উদ্ধার করে হালিমার কোলে ফিরিয়ে দেন।
হালিমা বলেন, নবজাতককে পুলিশ আমার কাছে দেওয়ার পর ওইদিন গভীর রাতে রুবেল তার লোকজন নিয়ে এসে জোর জবরদস্তি করে নবজাতককে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। দুই মাস পেরিয়ে গেলেও আমি আমার কোলের সন্তানকে ফিরে পেতে বিভিন্ন জায়গায় দেনদরবার করেছি কিন্তু ফল পায়নি।
নাড়িছেঁড়া ধন কোলের শিশুকে কাছে না পেয়ে হালিমা এখন পুত্র শোক ও দুধের যন্ত্রনায় দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলে জানান হালিমার স্বামী বাবুরালী।
এ ব্যাপারে ফোনে ওই নিঃসন্তান রুবেল-হাসি দম্পতির কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, হালিমা বেগমের মা মোমেনা খাতুন শিশুটিকে আমাকে দত্তক দিয়েছে। এজন্য আমি শিশুটির গর্ভকালীন সময় থেকে এ পর্যন্ত যাবতীয় খরচ বহন করেছি। এ পর্যন্ত আমার ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শিশুটিকে ফিরিয়ে নিতে হলে ৮০ হাজার টাকা আমাকে দিতে হবে।
শিশুটি রাখার বৈধতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, থানা পুলিশের লিখিত রয়েছে আমার কাছে। বাবু-হালিমা দম্পতির কথা এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানিনা। হালিমা জানায়, আমার মায়ের সহযোগিতা থাকতে পারে। তবে আমরা আমাদের সন্তান ফেরত চাই।
এ ব্যাপারে তারা প্রশাসনসহ মানবাধিকার সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেছেন।
মেসেঞ্জার/জামাল/তারেক