ঢাকা,  শুক্রবার
০৩ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

চিলমারীতে রাস্তার কাজে অনিয়মের অভিযোগ

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৭:৫১, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

চিলমারীতে রাস্তার কাজে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি : মেসেঞ্জার

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে উপজেলা হেড কোয়ার্টার হতে পাঁচপীর জিসি সড়ক পর্যন্ত ৫ দশমিক ২৩০ কি.মি. এলাকায় সড়ক উন্নয়ন কাজে অনিয়ম ও কালক্ষেপন করার অভিযোগ উঠেছে। কাজ শুরুর ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে মাত্র ২ কি.মি. রাস্তায় ৬০-৭০শতাংশ কাজ দৃশ্যমান হলেও সিডিউলে থাকা প্যালাসাইটিং ও সিসিব্লকের কাজ করা হয়নি। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন কাজ না করায় রাস্তাটি মানুষের ভোগান্তির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, দাখিল করে নাটোর এলাকার মীর হাবিবুল আলম এর নামে কাজটি বাগিয়ে নেন সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রির এপিএস রাশেদুল ইসলাম। 

জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলাধীন পাঁচপীর বাজার থেকে চিলমারী উপজেলা হেড কোয়ার্টার সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১হাজার ৪৯০মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প (৩য় সংশোধিত) এর আওতায় সড়ক উন্নয়নকরণ কাজ বাস্তবায়ন শুরু হয়।

এ লক্ষে চিলমারী উপজেলা হেড কোয়ার্টার মাটিকাটারমোড় হতে পাঁচপীর জিসি সড়ক (চেইঃ ১২২০মি.-৫২৩০ মি. ৪০১০মি.) উন্নয়ন করণ এবং চিলমারী উপজেলা হেড কোয়ার্টার হতে পাঁচপীর জিসি সড়ক (চেইঃ ০০মি.-১২২০মি. ১২২০মি.) মিলে মোট ৫.২৩০কি.মি. এলাকা উন্নয়নের ঠিকাচুক্তি সম্পাদিত হয় চলতি বছরের (১১ ফেব্রুয়ারী)।

যার চুক্তি মূল্য ছিল ১০ কোটি ৩৩ লক্ষ ২ হাজার ৮৩২টাকা। অতিমাত্রায় নিম্নদর দাখিল করে নাটোর এলাকার মীর হাবিবুল আলম এর নামে কাজটি বাগিয়ে নেন সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রির এপিএস রাশেদুল ইসলাম।

যেটি চলতি বছরের (১৮ ফেব্রুয়ারী) তারিখে শুরু হয়ে আগামী বছরেরর (১৭ ফেব্রুয়ারী) শেষ হওয়ার কথা। রাস্তাটি নতুন মাটির হওয়ায় মাটির রাস্তার ২কি.মি. এলাকায় রাস্তার দুই ধারে প্যালাসাইটিং ও প্রায় ৭০০মিটার এলাকায় সিসি ব্লক দেয়াসহ মাটির অংশে রাস্তার উপরে বক্স কাটিং, স্যান্ড ফিলিং, সাববেজ, ডব্লিউএমএম এবং কার্পেটিং ও পাকা অংশের ২ পাশ্বে ৩ ফুট করে বাড়িয়ে তাতে মাটির রাস্তার ন্যায় সকল কার্যাদীসহ ডব্লিউএমএম ও কার্পেটিং করার কথা থাকলেও দীর্ঘ ৯ মাসে মাটির রাস্তার অংশের মাত্র ২ কি.মি. এলাকায় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ৬০-৭০শতাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে। সেখানে প্যালাসাইটিং ও সিসি ব্লকের কাজ বাদ রয়েছে। বাকি ৩ কি.মি. এলাকার কোন কাজে এখনও হাত দেয়া হয়নি।

দীর্ঘ ৯ মাসে কাজের অগ্রগতি না থাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওই ৫.২৩০কি.মি. এলাকায় রাস্তা উন্নয়ন কাজে অনিয়ম ও কাল ক্ষেপনের অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে রাস্তাটি ঘুরে দেখা গেছে, পাঁকা অংশের রাস্তা বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দে নষ্ট হয়ে গেছে, কাঁচা অংশের কোথাও সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মাটির রাস্তার অংশে দায়সাড়াভাবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে মাত্র ২কি.মি.এলাকার ৬০-৭০শতাংশ কাজ করা হলেও সেখানে প্যালাসেটিং কিংবা সিসি ব্লকের কোন কাজ করা হয়নি। ফলে বিভিন্ন স্থানে রাস্তাটিতে ধসের সৃষ্টি হয়েছে।

এসময় সাববাধ দুই থানারমোড় এলাকার আব্দুল হামিদ, তাজুল ইসলাম, রুস্তম আলীসহ অনেকে বলেন, নতুন মাটির রাস্তাটি প্যালাসাইটিং এবং সিসি ব্লক না দিলে টেকসই হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ধস দেখা দিয়েছে।

তেলিপাড়া এলাকার মমিনুল ইসলাম, চার রাস্তার মোড় এলাকার মঞ্জু মিয়া,সালু মিয়া, ফরজ উদ্দিন, এন্তাজ আলীসহ অনেকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির কাজ চললেও রাস্তার দুই পাশ্বে গাইডওয়াল ও সিসিব্লক না দিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে উপরের কাজ করা হচ্ছিল, সেটিও প্রায় দেড় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। রাস্তাটির কাজ চুক্তিকৃত সিডিউল মোতাবেক বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট জোড় সুপারিশ করেন তারা।

এলজিইডি উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতাউর রহমান জানান, রাস্তাটির কাজ চলছে তবে ধীর গতিতে। মাটির রাস্তার দুই পাশ্বে প্যালাসাইটিং ও সিসি ব্লকের কাজ করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

কাজটি দীর্ঘদিন ধরে পরে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রির এপিএস রাশেদুল ইসলাম জানান, ওই রাস্তার কাজ ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য পড়ে আছে, কাজ করবো কি না তা সন্দেহ আছে।

আমি কাজটি দ্রুত শেষ করতে চাই।আজ প্রায় ১থেকে দেড় মাস হয় এক পাশ্বের ডব্লিউএমএম শেষ হয়েছে। এক থেকে দেড় মাস হয় কাজটি বুঝে নিচ্ছেন না তারা। রাস্তার দুই ধারে সিসি ব্লক এবং প্যালাসাইটিংয়ের প্রসঙ্গে তিনি জানান, মাটি শেষ হবে, স্যান্ড ফিলিং শেষ হবে, ডব্লিউএমএম শেষ হবে, তারপর কার্পেটিং ও ব্লক ফেলা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফিরোজুর রহমান জানান, আমরা প্রথমেই প্যালাসাইটিং এর কাজ করতে বলেছিলাম। 
কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে তিনি জানান, আমরা কাজ করার জন্য কয়েকবার চিঠি দিয়েছি। নির্বাহী প্রকৌশলী ও পিডি স্যার ঠিকাদারের সাথে কথা বলেছেন তারা কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

মেসেঞ্জার/রাফি/তারেক