ছবি : মেসেঞ্জার
যশোরের বাহাদুরপুর থেকে ১৫ কেজি সাতশ’ ২৮ গ্রাম সোনা ফেলে পালিয়ে যাওয়া চক্রে জড়িত ছিলেন বেনাপোলের পুটখালি গ্রামের চিহ্নিত চোরাকারবারী নাসির উদ্দিন ওরফে গোল্ড নাসির। শুধু তিনিই নন, এ ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন আরও আটজন। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়েই অভিযুক্তরা সটকে পড়েছিলেন।
এ সোনা উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বেনাপোলের গোল্ড নাসিরসহ নয় চোরাকারবারিকে অভিযুক্ত করে শনিবার (২৬ অক্টোবর) চার্জশিট দিয়েছে ঢাকা সিআইডি পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ দুই মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ফাইন্যান্সিয়া ক্রাইম (অর্গানাইজড ক্রাইম) সিআইডি ঢাকার পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম।
এর আগে একই ইউনিট যশোরের রাজারহাট থেকে প্রায় নয় কেজি ওজনের ৬০টি সোনার বারসহ একটি প্রাইভেটকার ফেলে পালানোর ঘটনায় বেনাপোলের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও একাধিক মামলার আসামি গোল্ড নাসির ও গাড়ির মালিক শফিককে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়।
সিআইডি পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে এ এলাকায় গোল্ড নাসিরের হাত ধরেই চোরাচালানের অধিকাংশ ঘটনা ঘটছে। এমনকী অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, এবার রাজনৈতিক ভোল্ট পাল্টে এখনো গোল্ড নাসির তার নানা অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে।
বাহাদুরপুর থেকে উদ্ধার হওয়া সোনার মামলায় অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন, যশোরের বেনাপোলের পুটখালী গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে নাজমুল হোসেন, সাহেব আলীর ছেলে রমজান আলী, দূর্গাপুর গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, চাঁদপুর মতলব উত্তর থানার দেওয়ান বাড়ি গ্রামের আতিউল্লাহ বেপারি ওরফে অলি বেপারির ছেলে রবিউল আলম রাব্বি, উক্তর খাগুরিয়া গ্রামের মিয়াজি বাড়ির আব্দুর রশিদ মিয়াজির ছেলে আরিফ মিয়াজি, মাদারীপুর সদরের বলসা মধ্যপাড়ার আবুল কালাম মাতুব্বরের ছেলে আবু হায়েত জনি, কুমিল্লা দাউদকান্দির নৈয়াইর গ্রামের সিরাজ বেপারি ওরফে মিরাজ বেপারির ছেলে শাহাজালাল ও নলচক গ্রামের মোহাম্মদ আব্দুল হকের ছেলে মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০২২ সালের (৩১ মে) গভীর রাতে যশোর ৪৯ বিজিবির সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে তিনটি প্রাইভেটকার যোগে সোনার চালান বেনাপোল সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তাৎক্ষণিক বিজিবির একটি টিম যশোর-মাগুরা সড়কের বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। গভীর রাতে তিনটি প্রাইভেটকার আসতের দেখে বিজিবি সদস্যরা গতিরোধ করেন। এরপর তিন প্রাইভেটকার চালকসহ ছয়জনকে আটক ও তল্লাশি করা হয়।
তল্লাশিকালে প্রাইভেট কারের সামনের অংশে অভিনব কায়দায় প্রস্তুত করা বিশেষ বক্সে রাখা মোট একশ’ ৩৫পিস সোনার বার (ওজন ১৫ কেজি সাতশ’ ২৮ গ্রাম) উদ্ধার করা হয়। যার দাম ১৩ কোটি ৫২ লাখ ৬০ হাজার আটশ’ টাকা।
এ ঘটনায় বিজিবির হাবিলদার মাহবুব আলম বাদী হয়ে আটক ছয়জনসহ অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে চোরাচালান দমন আইনে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ওই নয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এদিকে, স্থানীয়দের দাবি রাজনৈতিক পেক্ষাপট পরিবর্তন হলেও একই কাজ করে যাচ্ছেন গোল্ড নাসির। এমনকী তিনি বর্তমানে একজন বিএনপি নেতার ঘাড়ে ভর করার চেষ্টা করছেন। এজন্য তিনি পুটখালীর অলিয়ার, জিয়াসহ কয়েক জনের মাধ্যমে ওই নেতার আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মেসেঞ্জার/জামাল/তারেক