ছবি : মেসেঞ্জার
দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। একনাগাড়ে ক্রেতাদের কাছে সবজি বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ক্রেতার ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। অনেকে ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় উঁকি মেরে দেখছেন, কেন এত জটলা। এমন পরিবেশের মূল কারণ, এখানে বিক্রি হচ্ছে ন্যায্যমূল্যের সবজি।
নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় আলু, পেঁয়াজ, ঢেঁড়স, লাউসহ ২০ প্রকার সবজি পাওয়া যাচ্ছে, যা বাজারের চেয়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে। সেটি ঘিরেই মানুষের আগ্রহ। কম দামে সবজি কিনতে পেরে খুশি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। বলছিলাম গাইবান্ধা পৌর এলাকার পুরতন জেলখানা মোড়ে ছাত্রদের সবজি বিক্রির কথা।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে দেখা গেছে এ কর্মযজ্ঞ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাইবান্ধা শাখার উদ্যোগে সবজি বিক্রির প্রধান লক্ষ্য বাজারে বিদ্যমান সিন্ডিকেট ভাঙা ও মানুষের কাছে কম দামে সবজি পৌঁছে দেওয়া। এতে প্রথম দিনেই বেশ সাড়া ফেলেছে এই সবজির দোকান।
উদ্যোক্তা ছাত্ররা বলছেন, সিন্ডিকেট নির্মূল করা পর্যন্ত তাদের এই সবজি বিক্রির কার্যক্রম চলতে থাকবে। আপাতত ৭/৮ প্রকারের সবজি বিক্রি করা হলেও আগামী দুই এক দিনের মধ্যেই অন্তত ২০ রকম সবজি বিক্রি করা হবে বলে তারা আশা করছেন।
বিক্রি করা সবজির মধ্যে দেখা গেছে, কেজিতে লাউ ২৫ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪৫ টাকা, আলু ৩০ টাকা, কাঁকরোল ৪৫ টাকা, পটল ৩০ টাকা, ফুলকপি প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি কিনতে আসা আশরাফ আলী বলেন, নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ৬০ টাকার নিচে সবজি পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। কিন্তু এখানে প্রায় সব সবজি ৫০ টাকার নিচে। বাজারে আলুর দাম ৬০ টাকা হলেও এখানে মাত্র ৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তাই এখান থেকে সবজি কিনেছি। বাজারে দাম বাড়ানোর পেছনে কাদের হাত আছে, তাদের বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমরা ন্যায্য দামে বাজার করতে চাই।
রিকশাচালক জাহেদুল ইসলাম বলেন, বাজারে গেলে সবজির দাম শুনে ভয় লাগে। আমাদের মতো নিম্নবিত্তের মানুষের জন্য জীবন চলা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। আমি কম দামে সবজি বিক্রির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরা গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর, সুন্দরগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার কৃষক থেকে সরাসরি সবজি ক্রয় করেছি। সেগুলো গ্রাহকের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
এতে করে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে। বাজারেও এর প্রভাব পড়বে। সিন্ডিকেট বেকায়দায় পড়বে। যতদিন সিন্ডিকেট ভাঙতে পারব না, ততদিন এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে আমাদের।
মেসেঞ্জার/সিয়াম/তারেক