ছবি : মেসেঞ্জার
জামায়াতে ইসলমীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলেছিলেন, শেখের বেটি পালায় না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঠিকই শেখের বেটি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
তিনি ক্ষমতায় থাকাবস্থায় জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ স্থানীয় ১১জন নেতাকে হয় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, না হয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই সিরাজগঞ্জের ১৪জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। এরপরও জামায়াত-শিবিরের কোনো নেতা দেশ থেকে পালায় নাই।
বেসরকারী এক টেলিভিশনের টকশোতে উপস্থিত হয়ে আস্ফালন করে এক বিচারপতি বলেছিলেন, নিজামী ও মুজাহিদকে ফাঁসি দিলাম। সেই বিচারপতি সিলেটের বর্ডারে জঙ্গলের ভেতরে কলাপাতা গায়ে দিয়ে ছিলেন তিনি। সাধারণ জনতা তাকে গলায় গামছা বেঁধে ধরে এনেছে। এরা এতো অন্যায় করেছে, একেকজনের ১০বার ফাঁসি দিলেও তাদের শাস্তি কম হবে।
মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারের কাছে আহ্বান জানাব, এ ট্রাইব্যুনালে যারা বিচার করেছেন, যারা শাস্তি দিয়েছেন, তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। মিথ্যা মামলা, মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে নিজামী সাহেব, মুজাহিদ সাহেবকে যারা ফাঁসি দিয়েছেন, তাদের কারোরই ক্ষমা নেই এ বাংলার মাটিতে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন মুক্তির সোপান এলাকায় ২০০৬ সালের (২৮ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠা হামলায় নিহতদের স্মরণে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা রফিকুল বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা নেওয়ার পরই বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে নির্বিচারে হত্যা করেন। এরই মধ্যে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করে শেখ হাসিনাকে দায়ী করতে শুরু করেছেন।
তাদের প্রথম টার্গেট ছিল সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা। দ্বিতীয় টার্গেট ছিল ইসলামী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা। এজন্য মাওলানা নিজামীসহ জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে বিচারের নামে তামাশা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমার নামও দেওয়া হয়েছিল। বয়স কম হওয়ায় পরে তারা বাদ দিয়েছে। এ তালিকা এসেছে প্রতিবেশী দেশ থেকে। তারা মানুষ দেখে তালিকা করে নাই, তালিকা করেছে পদ দেখে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৬ সালের (২৮ অক্টোবর) থেকে (৫ আগস্ট) পর্যন্ত যতগুলো হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সে খুনিদের গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি কার্যকর করতে হবে।
জামায়াত ক্ষমতায় এলে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ পরিচালনা করার দায়িত্ব পেলে ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের বাংলাদেশে একজন সুন্দরী রমনী একা চলবে কোনো দুর্বৃত্ত তাকে নিপীড়ন করতে পারবে না। নারীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস, ব্যাংক আলাদা থাকবে। নারীরা তাদের আব্রু নিয়ে রাস্তায় চলবে, চাকরি করবে, ব্যবসা করবে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা মনে করি বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নেই। নাগরিক হিসেবে সবাই সমান। একজন মুসলমান যে অধিকার পাবেন, একজন অমুসলিমও সেই অধিকার পাবেন। ইসলামী রাষ্ট্র হলে অমুসলিমদের ধন-মান-ইজ্জত আব্রু ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেবে ইসলামী সরকার।
সিরাজগঞ্জ শহর জামায়াতের আমির মো. আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মো. শাহীনুর আলম, শহর জামায়াতের আমির মাওলানা মো. মোস্তফা মাহমুদ, জেলা জামায়াতে ইসলামী জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ আলী আলম, মাওলানা মো. আব্দুস ছালাম, সেক্রেটারি অধ্যাপক মো. জাহিদুল ইসলাম, জেলা শাখার প্রচার শাখার প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক অধ্যাপক মো. শহিদুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ছাইদুল ইসলাম খান, বেলকুচি উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. আরিফুল ইসলাম সোহেল, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি উদ্দিন প্রমুখ।
মেসেঞ্জার/রাসেল/তারেক