ছবি : মেসেঞ্জার
মসজিদ ও বালুমহাল নিয়ে বিরোধে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হাফিজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামীকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাড. মো. আবু বক্কার সিদ্দিক এতথ্য নিশ্চিত করে বলেন, প্যানেল কোটের ৩০২ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আসামী হাফিজুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড ও ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে আসামীর মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাঁর গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলিযে মৃত্যুদণ্ড কার্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী হাফিজুল ইসলাম আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে দোষী সাব্যস্তকরণ ও শাস্তির বিরুদ্ধে মহামান হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়ের করতে পারবেন। আদালতে এ মামলায় অপরাধ প্রমানিত না হওয়ায় আইয়ুব আলী ও মো. সেলিম হোসেনকে খালাস প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হাফিজুল ইসলাম উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ব মহেশপুর গ্রামের শাহজাহান প্রামানিকের ছেলে ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, ওই গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দুলাল, মো. বাচ্চু মিয়া, মো. দুলাল সরকার, মো. মাসুদ উল্লাহ রতন, মো. রহমত উল্লাহ পান্না, মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. বদিউজ্জামান।
মামলাসূত্রে জানা যায়, উল্লাপাড়ার পূর্ব মহেষপুর গ্রামে 'মসজিদ ও বালু মহাল নিয়ে আসামিদের সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আলতাব হোসেনে মুকুলের বিরোধ চলে আসছিলো। এ নিয়ে একাধিক মামলাও রয়েছে। এই বিরোধের জের ধরে আলতাব হোসেনে মুকুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে উপজেলার পূর্ব মহেষপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদ ও তার সহযোগীরা।
'২০১৯ সালের (২৬ জুন) রাতে আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে আলতাফ হোসেন মুকুলের বাড়িতে প্রবেশ করে প্রথমে আলতাফ হোসেন মুকুলকে চাপাতি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনাটি তার মা রেজিয়া খাতুন দেখে ফেলায় তাকে চাপাতি, ছুরি ও রামদা দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে এবং উভয়ের পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শামীম আরা আবুল কালাম আজাদসহ ২১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় ৭ আসামীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। মামলায় ১১ জনের নামে চার্জশীট দাখিল করে পুলিশ। সাক্ষ্য প্রমাণে আদালতে ২০ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালতের বিচারক আজ এ রায় প্রদান করেন।
মেসেঞ্জার/রাসেল/তারেক