ছবি: মেসেঞ্জার
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গুনগুনিয়া বেতাগীর কমিউনিটি সেন্টার নামক স্থানে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিফলক 'শহীদ মিনার' ভেঙে জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করেছে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন আওয়ামী সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট প্রকাশ্য দিবালোকে শাবল, খন্তা, বড় হাতুড়ি দিয়ে শহীদ মিনারটি ভেঙে রডগুলো নিয়ে যায়। এ নিয়ে গত ১৪ অক্টোবর স্থানীয় বদিউর রহমানের ছেলে খলিলুর রহমান, আবু ছৈয়দ বলির ছেলে আজগর আলী, মো. রুবেল, ওয়াহাব মিয়ার ছেলে আবু ছৈয়দ বলি ও খলিলুর রহমানের ছেলে নুরুল আবছারকে আসামি করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চট্টগ্রামে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার বাদি স্থানীয় কাজী রাশেদ হাসান জানান, ১৯৬৪ সালে অভিযুক্ত খলিলুর রহমানের পিতা বদিউর রহমান বেতাগী ইউনিয়ন পরিষদের জন্য ১ একর জায়গা শর্তমূলে দান করেন। এ ১ একর জায়গার বাহিরে ৩ শতক জায়গা রয়েছে যা সর্বসাধারণের ব্যবহারের কথা খতিয়ানমূলে প্রচার আছে। কিন্তু বিবাধীগং মিথ্যা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিএস খতিয়ান দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এ জায়গা দখলের চেষ্টা করে। ভুয়া বিএস খতিয়ান সৃষ্টি করে সর্বসাধারণের ব্যবহারের জায়গাটি দখলে নেওয়ার চেষ্টার খবর প্রচার হলে ২০১৭ সালে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তবর্গ একটি মামলা দায়ের করে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন থাকাবস্থায় শক্তি প্রদর্শন করে বহু বছরের পুরনো শহীদ মিনার ভেঙে দখলে নেয় এবং দোকান নির্মাণ করে। এ নিয়ে এলাকার জনসাধারণ ক্ষুব্ধ হলে তাদের পক্ষে আমি মামলাটি করি। তিনি দাবি করেন এ ৩ শতক জায়গায় এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান ভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান এ জায়গায় অনুষ্ঠিত হতো।
প্রত্যক্ষ দর্শী শফিউল আলম সওদাগর জানান, প্রবাসী খলিলুর রহমান গত ৭ আগস্ট লোকবল নিয়ে শহীদ মিনারটি ভেঙে টিনের ঘেরা দিয়ে সর্বসাধারণের ব্যবহারের জায়গাটি দখল করে।
খলিলুর রহমানের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি নানা কারণে দখলে নিতে পারিনি। গত ০৭ আগস্ট বেদখলি সম্পত্তি দখলে নিয়ে দোকান নির্মাণের কথা স্বীকার করলেও শহীদ মিনার ভাঙ্গার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এ নিয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেও দাবি করেন।
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম জানান, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথাও জানান তিনি।
মেসেঞ্জার/মঞ্জুরুল/ফামিমা