ছবি: মেসেঞ্জার
দেশের অন্যতম মোংলা সমুদ্র বন্দরের অনেক ভবিষ্যৎ আছে, কিন্তু সেই ভবিষ্যতের জন্য এই বন্দরকে বিগত দিনে সেভাবে তৈরি করা হয়নি উল্লেখ করে নৌ পরিবহন এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, মোংলা বন্দরকে পিছিয়ে রাখার কোন সুযোগ নেই। এখানে কন্টেইনার টার্মিনাল নেই। চায়না ও ভারতের অর্থায়নে জি টু জি’র আওতায় মোংলা বন্দরের সাথে হওয়া চুক্তি বাস্তবায়ন এবং প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আগামী দুই বছরের মধ্যে এই বন্দরের দৃশ্যপট পাল্টে যাবে।
মোংলা বন্দরে প্রথমবার পরিদর্শনে এসে বুধবার (৬ নভেম্বর) উপদেষ্টা এম সাখায়াত হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
একই সাথে প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে কন্টেইনার টার্মিনাল ও ইয়ার্ডসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। এর ফলে চট্রগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমবে এবং মানসম্মত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ভারত, নেপাল ও ভূটানের জন্য এই বন্দরটি ব্যবহারের উপযোগী হবে বলেও জানান তিনি। উপদেষ্টা এসময় খুলনা ও যশোরের বন্ধ ৫টি পাটকল চালুর জন্য চায়না ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ইজারা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে সাংবাদিকদের জানান।
এছাড়া মোংলা বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করা হবে উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মোংলা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় সমুদ্র বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অর্থনীতিতেও বন্দরটি ব্যাপক অবদান রাখছে। রাজধানী ঢাকা থেকে বন্দরটির সড়ক পথে দূরত্ব মাত্র ২১০ কিলোমিটার। আর বন্দরটির সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য প্রান্তের রেল ও নৌযোগাযোগ রয়েছে। এ বন্দরটিকে পিছিয়ে রাখার কোন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, মোংলা বন্দরকে আরো আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং কিছু প্রকল্প ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হাতে নেয়া হয়েছে। নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরের বার্ষিক সক্ষমতা বাড়বে। চ্যানেলে ৮ দশমিক ৫ সিডি গভীরতা অর্জিত হবে। এতে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ মোংলা বন্দরে হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে। মোংলা বন্দরে বছরে প্রায় ৮ লাখ টিইউ কন্টেইনার, ৪ কোটি মেট্রিক টন কার্গো এবং ৩০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা হবে।
এ সময়ে বন্দরের কার্যক্রমকে আরও বেশি গতিশীল ও আমদানি-রফতানিকারকদের উৎসাহিত করতে রাজস্ব বিভাগকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্দরে স্ক্যানার স্থাপনের নির্দেশনা প্রদান করেন উপদেষ্টা।
মোংলা বন্দর ব্যবহার করার জন্য নেপাল ও ভুটানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, তারা মোংলা বন্দর ব্যবহার করলে বন্দরের কার্যক্রমে আরো গতিশীলতা আসবে এবং দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম সম্পর্কে আরও বেশি প্রচার প্রচারণা চালানো দরকার। বন্দরের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত বুকলেট তৈরি করে আমাদের বিদেশী মিশনগুলোর মাধ্যমে প্রচারণা বাড়াতে হবে।
এর আগে নৌ পরিবহন এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমানসহ কর্মকর্তাদের সাথে বন্দরের ড্রেজিং ও উন্নয়ন প্রকল্প, জাহাজ, কন্টেইনার এবং গাড়ি আমদানির বাৎষরিক হিসাব নিয়ে মত বিনিময়সহ বন্দরের পশুর চ্যানেল ও জেটি এলাকা পরিদর্শন করেন।
মেসেঞ্জার/আবুল/ফামিমা