ছবি: মেসেঞ্জার
‘প্রসিত তারা পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন অথচ ভেতরে ভেতরে আত্মস্বায়িতশাসন। ভেতরে ভেতরে কোলাকুলি অপরদিকে এখানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। জনগণকে সিদ্ধান্তে যাইতে হবে কি প্রসিত সঠিক নাকি এমএন লারমা সঠিক? সন্তু লারমা সঠিক এটাই নির্ধারণ করতে হবে। দুই নৌকায় পা দেওয়া যাবে না। এক নৌকায় পা দিতে হবে। যেটা সঠিক সেটা গ্রহণ করতে হবে। প্রসিত নাকি এমএন লারমা সঠিক তা জনগণকে বুঝতে হবে।’
রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার ৪১তম মৃত্যুবাষিকী ও জুম্ম জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে সাবেক সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার এ কথা বলেছেন।
'পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থি সকল কার্যক্রম প্রতিরোধ করুন, জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অধিকতর সামিল হউন' এ শ্লোগানে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা কমিটির আয়োজনে রাঙামাটিতে পালিত হয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অবিসংবাদিত নেতা মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার মৃত্যুবার্ষিকী।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলার সভাপতি ডাক্তার গঙ্গামানিক চাকমার সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্ক এর সভাপতি আইনজীবী ভবতোষ দেওয়ান, আইনজীবী জুয়েল দেওয়ান,শিক্ষাবিদ শিশির চাকমাসহ অন্যান্য প্রমূখ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার আরো বলেন, শুধু আন্দোলন,মিছিল করলেই কি ঐক্য হওয়া যায়? ঐক্য ঐক্য ডাক দিলে ঐক্য হয়না। ঐক্য হবে কাজের মধ্যদিয়ে। ইউপিডিএফের সাথে যেদিন চুক্তি করলাম সেদিন আমাদের এক লোককে মেরে দিয়েছে। ওরা যদি ঐক্য চাই তাহলে কি দরকার ছিলো জুরাছড়িতে যাওয়ার? তারা যদি ঐক্য চাই মাইকেল চাকমা যে এতবছর দুঃখ-কষ্টে আয়নাঘরে ছিলো সেই মাইকেল চাকমা বলতেছে সেই অংগ্য মারমা বলতেছে চুক্তি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এমএন লারমা নিজের বেতন দিয়ে দরিদ্র ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পড়িয়েছেন। সরকারের ষড়যন্ত্রের কারণে আজ আমরা বিলুপ্ত হতে চলেছি। আমাদের অস্তিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সকলকে সংস্কৃতি রক্ষা করতে হবে। ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে। সবাইকে ঐক্য থাকতে হবে।
এমএন লারমা ১৯৭০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম আসন থেকে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ৪ দফা সংবলিত আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসনের দাবিনামা পেশ করেন। সেই সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) গঠন করে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনসংহতি সমিতির মনোনীত প্রার্থী হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম -১ আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। একই বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নেন। এমএন লারমা ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর ৮ সহযোগীসহ দলের বিভেদপন্থি প্রীতি গ্রুপের হাতে নিহত হন।
মেসেঞ্জার/ফামিমা