ছবি: মেসেঞ্জার
নীলফামারীর ডিমলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর পচা-দুর্গন্ধ, ছত্রাকযুক্ত ও নিম্নমানের চাল বিতরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (১০ নভেম্বর) উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নে ডিলার এরসাদ আলী গুদাম ঘর এই পচা চাল বিতরণ করে উপকারভোগীরা এমনটা অভিযোগ করেছেন।
চাল উত্তোলনকারী দক্ষিণ খড়িবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আনিছা বেগম (৫৫) বলেন, ‘সরকারিভাবে যে চাল দিচ্ছে তা কোনোভাবেই খাওয়ার উপযোগী নয়। রান্নার সময় ভালো চাল মিশাতে হয়।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, পচা, ছত্রাকযুক্ত, পোকামাকড় ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল দেওয়া হচ্ছে। গরিব মানুষ আমরা। বাধ্য হয়ে এখান থেকে কার্ডের মাধ্যমে কম টাকায় চাল কিনি। কিন্তু তা খাওয়া যায় না।
ডিমলা উপজেলার কয়েকটি ওএমএসের চালের ডিলার পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, ডিমলা উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহকৃত চালের মধ্যে ছেড়া-ফাটা বস্তা, পচা, ছত্রাকযুক্ত, দুর্গন্ধযুক্ত চাল বিতরণ করছে। গ্রাহকরা চাল নিতে অনিহা প্রকাশ করলেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে নিতে গ্রাহকদের হচ্ছে।
এ বিষয়ে ওএমএসের চালের ডিলার এরশাদ আলী বলেন, ‘খাদ্য গুদাম থেকে চাল সংগ্রহ করি। মাঝে মধ্যেই ভালো চালের মধ্যে খারাপ চাল পাওয়া যায়। সব বস্তা তো আর দেখে নেওয়া যায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘খাদ্য গুদাম যা দেয়, তাই বিতরণ করি। কিন্তু জনগণ নিতে চায় না।’
আরেক ডিলার আব্দুল কমির, আলম মিয়াসহ আরো কয়েকজন বলেন, ‘ডিলাররা অসহায়। ডিলারশিপ বাতিলের ভয়ে কিছু বলতে পারি না। খাদ্য গুদাম সার্চ করলে এ রকম বহু বস্তা নষ্ট চাল পাওয়া যাবে। প্রতিবার চাল নিতে আসলে মোটা অংকরে ঘুষ দিতে হয়। লেবারের বিলের জন্য ৩-৪ বস্তা চাল নামিয়ে নেন ওসিএলএসডি।
চাল নিতে আসা চেয়ারম্যান পাড়া গ্রামের মর্জিনা বেগম (৪০) বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। পেটের দায়ে এই সরকারি চাল কিনে খাই। মাঝে মধ্যেই পচা লাল চাল দেয়, কিন্তু কিছু বলতে পারি না। কারণ গরিবের কথা শুনবে কে?’ আরেক ভুক্তভোগী কলোনীপাড়া গ্রামের এলাকার আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, ‘ঘণ্টা পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে যখন পচা চাল পাই, তখন আর মনে চায় না সরকারি চাল নিতে আসি। বাধ্য হয়ে পেটের দায়ে আসি।’
এবিষয়ে ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রুহুল আমিন মোছাদ্দেক বলেন, পচা চাল দিচ্ছে কিনা আমি জানি না। আপনি উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলেন ওনি বিস্তারিত জানাতে পারবেন।
ডিমলা উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) হাসান মোঃ আজিজুল হাকিম বলেন, আমার গুদাম থেকে ভালো চাল দেওয়া হয়েছে, আমার কাছে তার স্যাম্পল এখনও আছে। কোনো ধরণের পঁচা চাল দেওয়া হয়নি। এখান থেকে বাহির হয়ে গেলে কারো কিছু করার থাকে না। তদারকি করার লোক আমরা না, তদারকি করার লোক আলাদা আছে।
মেসেঞ্জার/রিপন/ফামিমা