ঢাকা,  শুক্রবার
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

চট্টগ্রামে ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক,চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১৪:৫৯, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামে ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

ছবি: মেসেঞ্জার

বাংলাদেশে প্রতি বছর ২২ লাখ জনশক্তি শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। এখন যারা শিক্ষার্থী রয়েছেন তারা সামনে কি করবেন তা অস্পষ্ট। বর্তমানে শিক্ষার সঙ্গে শ্রমবাজারের যে দূরত্ব রয়েছে এ জন্য যুব সমাজের মধ্যে কিছুটা হলেও অসন্তুষ্টি রয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের অংশগ্রহণের পেছনে এটি কাজ করেছে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের কেসি দে রোডের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইনের পলিসি ডায়ালগে এমন কথাই বললেন অতিথিরা।

এদিন চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একঝাঁক তরুণ শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা ক্যাম্পেইনে অংশ নেন। রেজিস্ট্রেশনের পর জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় ক্যাম্পেইন। এ সময় ক্যাম্পেইন নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র রিজিওনাল ম্যানেজার মো. সদরুল আমিন।

স্বাগত বক্তব্যে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি চীফ অফ পার্টি আমিনুল এহসান বলেন, আমাদের সবার জীবনের সমস্যাগুলোর দিকে তাকালে কিছুটা মিল খুঁজে পাব। যেমন, ট্রাফিক সমস্যা, ডেঙ্গু আতঙ্ক। এছাড়া বেকারত্বের মতো সমস্যাগুলো আগে থেকেই রয়েছে। কিন্তু দেশে ক্ষমতায় পরিবর্তন এলেও আমাদের জীবনে পরিবর্তন আসে না। ‘আমিও জিততে চাই’ প্ল্যাটফর্ম থেকে আমরা আপনাদের দাবি সরকার ও রাজনৈতিক দলের কাছে নিয়ে যাব। আর এর সাফল্য নির্ভর করছে আপনাদের অংশগ্রহণের ওপর। ।

পরে ‘যুব কর্মসংস্থান: প্রত্যাশা ও সুপারিশ’ শীর্ষক পলিসি ডায়ালগে অংশগ্রহণ করেন ক্লিপটন গ্রুপের ডিরেক্টর এবং সিইও এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। সরকারি চাকরির পেছনে তারুণ্যের একরোখা আগ্রহ নিয়ে তিনি বলেন, আসলে সরকারি চাকরি মানে নিশ্চিত জীবন। কোনো জবাবদিহি নেই। বেসরকারি চাকরিতে সেটা নেই। ফলে তরুণদের কাছে সরকারি চাকরি লোভনীয় বিষয়। অন্যদিকে বেসরকারি চাকরিতে এই সুযোগ নেই।

এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে যারা উদ্যোক্তা আছেন, তাদের অধিকাংশ কোথাও না কোথাও জব করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে তারা উদ্যোক্তা হয়েছেন। চাকরি করে জমানো টাকা ও ব্যাংক লোন দিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করেন। তাই আগামী দিনের উদ্যোক্তাদের বলতে চাই, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট সনাতনী। কোনো ইন্টার্নশিপ বা জব না করেই তরুণরা এমবিএ বা মাস্টার্স করে ফেলেন। কিন্তু আমাদের দেশের পরিবারগুলো সুযোগ না দিয়েই চাকরির জন্য সন্তানকে পাঠিয়ে দেয়। ফলে তাদের হন্য হয়ে ঘুরতে হয়। যেহেতু বাজার ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো অভিজ্ঞতাকেই মূল্য দেবে।

এ সময় আইএলও হেড অব চিটাগাং অফিস অ্যালেক্সসিউস চিছাম বলেন, শ্রম বাজারের সঙ্গে শিক্ষার মধ্যে অনেক অসঙ্গতি আছে। আমি নিজেও অনেক সুযোগ পাইনি। গ্রাম ও শহরের শিক্ষায় পার্থক্য আছে। কিন্তু চাকরির বাজারে আমাকে বিদেশ থেকে পড়ে আসা, ভালো ইংরেজি জানে এমন মানুষের সঙ্গে ফাইট দিতে হয়।

চিটাগং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ফারহানা যুথী বলেন, আমাদের সামাজিকভাবে উদ্যোক্তা হওয়া কঠিন। টাকা কোথায় পাব, লোন কে দেবে- এসব রিস্ক আছে। পরিবারগুলো সবসময় বলে স্থায়ী চাকরি প্রয়োজন। না হলে দায়িত্ব নিতে পারবে না। এ কারণে তরুণরা উদ্যোক্তা রিস্ক নিতে চায় না।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনসিসির কর্ণফুলীর রেজিমেন্টের সাবেক অ্যাডজুট্যান্ট আবদুল্লাহ আল মামুন ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ইয়ুথ চীফ এ এন এম তামজীদ।

এর আগে ইউএসএইডের অর্থায়নে ও ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই ক্যাম্পেইনে ছিল নাগরিক সমস্যা নিয়ে থিয়েট্রিকাল পারফর্ম্যান্স, কুইজ ও ভিডিও মেসেজ প্রতিযোগিতা এবং ক্যাম্পেইনের রিল প্রদর্শনী। শেষে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পরে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ও মাল্টিপার্টি এডভোকেসি ফোরামের (ম্যাফ) প্রতিনিধি ক্যাম্পেইনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

ইউএসএইডের স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্পের আওতায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলায় আলোচনা, নাট্য প্রদর্শনী, বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি পরিচালনা করছে। ক্যাম্পেইনটির আওতায় www.amiojittechai.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রহণ করা হচ্ছে নাগরিকদের দাবি ও মতামত।

মেসেঞ্জার/সাখাওয়াত/ফামিমা