ছবি : মেসেঞ্জার
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাগরফেনা গ্রামের মো. জামাল সরকারের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে (২৫) অপহরণ করে নিয়ে ছয় টুকরা করে কাঁঠালিয়া নদীতে ফেলে দিয়েছে সাবেক প্রেমিক তারেক মাহমুদ মুন্না।
জান্নাতকে অপহরণের দুই মাস পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই কাউছার নিশ্চিত হয়েছেন অপহৃত জান্নাতকে হত্যা করে ছয় টুকরা করে কাঁঠালিয়া নদীতে ফেলে দিয়েছে সাবেক প্রেমিক ঘাতক মুন্না। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই কাউছার বলেন, শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাত এগারোটায় কুমিল্লা ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় কুমিল্লা শহর থেকে মুন্নাকে আটক করতে সক্ষম হই।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এবং আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে মুন্না বলেন, জান্নাত তার পাশের বাড়ির চাচাতো বোন হয়, তার সাথে আমার এক বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল, ২০১৮ সালে মুন্না বিদেশ চলে যায় এবং ২০২২ সালে দেশে আসি তখন জান্নাত বিয়ের করার জন্য চাপ দেয় এবং গ্রামে একাধিক শালিসি বৈঠক করে,পরে আমি এক মাস পর আবার বিদেশ চলে যাই।
আমি বিদেশ থাকা অবস্থায় জানতে পারি জান্নাতের চরিত্র ভালোনা তখন আমি তাকে বলি তোমার চরিত্র খারাপ আমি তোমাকে বিয়ে করব না। তখন জান্নাত ক্ষিপ্ত হয়। এক বছর পর ২০২৩ সালে আবার দেশে আসি এবং আমার পরিবার আমার জন্য মেয়ে দেখা শুরু করে, জান্নাত তখন আমার সাথে এবং আমার পরিবারের সাথে ঝামেলা করে।
তখন আমি বিয়ে না করে আবার বিদেশ চলে যাই। ২০২৪ সালে আবার দেশে আসি এবং অন্যত্র বিয়ে করি, তখন জান্নাত খবর পেয়ে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে আমাকে সুখে থাকতে দিবেনা এবং মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে থাকে আমাকে দেখে নিবে এবং আমার স্ত্রীকে সব জানাবে,তার এমন কথায় আমি হতাশ হয়ে পড়ি।
তখন আমার মাথায় আসলো আমি জান্নাতকে বিষয়টি বুঝাব, না হলে মেরে ফেলব। (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ফোন দিয়ে জান্নাতকে বলি আমার সাথে দেখা করতে, সে আমাকে বলে গৌরীপুর বাজারের দেখা করবে, সকাল এগারোটায় গৌরীপুর বাজারে দেখা করি এবং আমাকে রেখে দেড় ঘন্টা অন্যত্র চলে যায়, দেড় ঘন্টা পর আমাকে ফোন দিলে আমরা এক সাথে সিএনজি দিয়ে হোমনা চলে যাই, হোমনা ব্রিজে ঘুরাফেরা করি।
সন্ধ্যা বেলা সিএনজি দিয়ে আমারা কাঁঠালিয়া গ্রামে যাই, ঐখানে একটি ব্রিজে অনেকক্ষন সময় কাটাই, তখন রাত হয়ে যায়, তখন আমি জান্নাতকে বুঝাতে থাকি যে তুমি অন্যত্র বিয়ে করে সুখি হও আমাকেও সুখে থাকতে দেও, সে রাজি হয়নি, তখন আমি তার হাতে পায়ে ধরে বুঝাই, সে আমাকে লাথি মারে, এক পর্যায়ে আমার ব্যাগে থাকা ডাব কাটার দা এর উল্টো দিক দিয়ে তার মাথায় বারি দেই, তার পরে কয়েকটা কুপ দিয়ে মাথা আলাদা করে ফেলি, তার পর দুই হাত, দুই পা কেটে আলাদা করে সব কাটা টুকরা গুলো নদীতে ফেলে দেই।
পরে মাটিতে লেগে থাকা রক্ত আমার সাথে থাকা কাপর দিয়ে মুছে ফেলি এবং পড়নের গেঞ্জি ও সাথে থাকা দা, ব্যাগ নদীতে ফেলে দেই এবং সাথে থাকা এক সেট কাপড় পড়ে সেখান থেকে চলে আসি, বাসায় এসে দুরুদ শরিফ পড়ে ঘুমিয়ে পড়ি।
এবিষয়ে জান্নাতের মা ও মামলার বাদী হালিমা বেগমসহ সাগর ফেনা গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ মুন্নার দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে জান্নাতুল ফেরদৌস (২৫) অপহরণ করে মুন্না এঘটনায় জান্নাতের মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে সাত জনকে আসামী করে (৯ সেপ্টেম্বর) তিতাস থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন।
মেসেঞ্জার/সাগর/তারেক