ছবি : মেসেঞ্জার
সদ্যঘোষিত অন্তর্বর্তীকালীন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠনে বৈষম্য সৃষ্টির খোদ প্রকাশ করেছে রাজস্থলী উপজেলাবাসী। এতে জনমনে ক্ষুব্ধ ও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
(৭ নভেম্বর) পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাছলিমা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে (নং ২৯.০০.০০০০.০০০.২১৪.১৮.০০২২.২৪.-১১৯) অন্তর্বর্তীকালীন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুর্নগঠন করা হয়।
অতীতে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হিসেবে রাজস্থলী উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের অতীতের ইতিহাসে রেকর্ড ভঙ্গ করে রাজস্থলী উপজেলা থেকে কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি।
অবিলম্বে ঘোষিত প্রজ্ঞাপন বাতিল করে রাজস্থলী উপজেলা থেকে প্রতিনিধি দিয়ে নতুনভাবে প্রজ্ঞাপন দেয়ার দাবি জানান অন্যথায় আন্দোলনের হুঁশিয়ারী দেন এলাকাবাসী।
অতীতে দেখা যায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ যতবারই গঠন করা হয়েছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সমন্বয়ে (রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের আইন অনুযায়ী) জেলার প্রত্যেকটি উপজেলা থেকে প্রতিনিধি নিয়ে গঠন করা হয়েছিল।
কিন্ত এই প্রথম বার রাজস্থলী উপজেলার প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি করে স্বৈরাচারী হাসিনার দোসরদের গোপন আতাতের মাধ্যমে কিছু আওয়ামী সরকারের নেতাকর্মীদেরকে দিয়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পূর্ণগঠন করা হয়। যাহা রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার জনগণের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানান, বিগত বছরগুলোতে স্বৈরচারী হাসিনা সরকারের আমলে যেমনি বঞ্চিত ছিলাম এখনো একইভাবে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা মনে করেছিলাম (৫ আগস্ট) ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর নতুন বাংলাদেশ পাবো। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজনই এখনো সর্বত্র বিদ্যমান আছে।
পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর থেকে বিএনপি, জামাতের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে খুশি হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক প্রকার উৎসবের বন্যা বইছে। রাজস্থলী উপজেলা থেকে কোনো প্রতিনিধি না থাকায় চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দলীয় যাদেরকে নিয়োগ করা হয়েছে তাদেরকে বাদ দিয়ে প্রয়োজনে নিরপেক্ষ প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে নতুন ভাবে প্রজ্ঞাপন দেয়ার দাবি জানান। যাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শুনাম অক্ষুণ্ন থাকে এবং বৈষম্যহীন সুন্দর একটি বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র-জনতার রক্ত বৃথা না যায়।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বেশিরভাগ সদস্য জনগণের অপরিচিত এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের দলীয়। যাহা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুনাম দারুন ভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিগত তিন মাসে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যাপক সাফল্য থাকলেও ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকদেরকে নিয়োগ দেয়ার ফলে তা ধুলোয় মিশে যাচ্ছে।
অবিলম্বে এসব আওয়ামী লীগের দোসরদের বাদ দিয়ে নতুন ভাবে সদস্য নিয়োগ দেওয়ার জন্য এলাকাবাসীর প্রানের দাবি।
মেসেঞ্জার/উচ্চপ্রু/তারেক