ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
১৪ নভেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

বিতর্কিত ব্যক্তিদের উপদেষ্টা করে বিপ্লবকে কলঙ্কিত করবেন না: চরমোনাই পীর

চকরিয়া প্রতিনিধি, কক্সবাজার

প্রকাশিত: ২১:৪৩, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

বিতর্কিত ব্যক্তিদের উপদেষ্টা করে বিপ্লবকে কলঙ্কিত করবেন না: চরমোনাই পীর

ছবি: প্রতিনিধি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে তারা সকলেই ছিল খুনি, জালেম, দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী। তাদের দ্বারা কখনো বাংলাদেশের শান্তি আসেনি। সেজন্য বাংলাদেশের মানুষ আর তাদেরকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। দেশের মানুষের মুক্তি ও কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) চকরিয়া থানা রাস্তার মাথা সংলগ্ন চত্ত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চকরিয়া উপজেলা আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার এদেশের মানুষের উপর জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার রক্তের উপর দাঁড়িয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল। আমরা আশা করেছিলাম তারা দেশের মানুষের বোধ বিশ্বাসকে লালন করে দেশের বৃহত্তর গণমানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবেন। কিন্তু তা না করে ফারুকীসহ বিতর্কিত ব্যক্তিদের উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত করে দেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করেছেন। দেশের ইসলাম প্রিয় জনতা কখনো তা মেনে নিতে পারে না।

জনসভা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মুফতি শামসুল হক কাসেমীর সভাপতিত্বে ও চকরিয়া থানা উত্তর সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আমেরিকাসহ বিশ্বশক্তি ইসরাইলের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের উপর যে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাই অনতিবিলম্বে ফিলিস্তিনের অধিকার ফিরিয়ে দিতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি বলেন, ১৬ বছর যাবদ যারা দেশের মানুষকে খুন-গুম, হত্যা, দুর্নীতিসহ নির্যাতনের চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল, হাজারো ছাত্র জনতার জীবনের বিনিময়ে যারা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে, সেই আওয়ামী লীগকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার এখতিয়ার জামাতসহ কোনো রাজনৈতিক দলকে দেশের জনগণ দেয়নি। আবার স্বৈরাচার আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য বিএনপি'র যে বক্তব্য তাও কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ইসলাম বলেন, কোনো দল ও মত দেশের মানুষের শান্তি দিতে পারেনি। সেই জন্য হাতপাখা প্রতীকের পক্ষে দেশের মানুষের বৃহত্তর জনমত গড়ে তুলতে হবে। আগামী নির্বাচনে ইসলামী শক্তিকে বিজয়ী করার জন্য আন্দোলনের সকল নেতা কর্মীদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী বলেন, স্বাধীনতার পরে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজরা ক্ষমতায় এসেছে। তাই মানুষের কাঙ্খিত মুক্তি আসেনি। আগামী নির্বাচন প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তে  সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে।

জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন কক্সবাজার জেলার সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ আলী, খাগড়াছড়ি জেলার সভাপতি মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, কক্সবাজার জেলার সহ-সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ শোয়াইব, সেক্রেটারী মাওলানা এ.আর.এম ফরিদুল আলম, জয়েন্ট সেক্রেটারী রাশেদ আনোয়ার, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী আব্দুর রউফ লাভলু, জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ কক্সবাজার জেলার সভাপতি মাওলানা মোহসেন শরীফ, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম কক্সবাজার জেলার সভাপতি মাওলানা আমিরুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলন কক্সবাজার জেলার সভাপতি মাওলানা নুরুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন কক্সবাজার জেলার সভাপতি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিনসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

মেসেঞ্জার/রিদুয়ান/এসকে/ইএইচএম