লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার গত ছয় মাস ধরে নতুন বিদ্যুৎ মিটারের সংযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে আবেদন জমা দিয়ে দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন মানুষ। বিদ্যুতের মিটার ও সার্ভিস ড্রপ তারের চরম সংকটে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। তবে গ্রাহক নিজ খরছে সার্ভিস ড্রপ তার কিনে দিলে কিছু মিটার সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছে, চাহিদা অনুযায়ী সার্ভিস ড্রপ তার ও মিটারের সরবরাহ না থাকায় নতুন সংযোগ দিতে সমস্যা হচ্ছে। তবে শিগগিরই এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস নেই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সূত্রে জানা গেছে, এক হাজারের বেশি গ্রাহক নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করেছে। কিন্তু প্রায় ছয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে বৈদ্যুতিক মিটার ও ড্রপ তারের সরবরাহ। এ কারণে নতুন এসব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ সংযোগ মিলছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন গাছাড়া দিয়ে বসে আছেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে মিটার এবং তারের সংকট দেখা দিলেও বিষয়টি কোনো আমলেই নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা। মিটার সংযোগ বন্ধ থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে গ্রাহকদের।
বুধবার সকালে সরজমিনে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা দেখা যায়, বেশ কয়েকজন আবেদনকারীর জটলা। এ সময় কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। তাদের সবার মুখেই শোনা যায় ভোগান্তি ও হতাশার কথা। প্রতিনিয়ত অফিসে আসছেন। আবেদন করে মাসের পর মাস সংযোগ না পাওয়ায় অনেকই বাধ্য হয়ে বাহির থেকে সার্ভিস ড্রপ তারের কিনে সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। এতে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা অতিরিক্তি খরচ হচ্ছে। তবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্তৃপক্ষের নীরবতাকেই গ্রাহকসেবার নামে ভোগান্তি হিসেবে দায়ী করছেন অনেকে। তবে সেবার মান বৃদ্ধিতে সংযোগ তার এবং মিটার সরবরাহে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এমনটাই প্রত্যাশা গ্রাহকদের।
পৌর শহরের নাজমুল ইসলাম এনা বলেন, ‘নতুন সংযোগের জন্য চার মাস আগে এই অফিসে আবেদন করেছি এবং মিটারের জন্য টাকাও জমা দিয়েছি। সেই থেকে প্রতি সপ্তাহে একবার করে অফিসে আসি। আমি এখানে ঘুরতে ঘুরতে বিরক্ত। শেষে বাধ্য হয়ে সংযোগের জন্য ২ হাজারটাকার তার কিনে দিয়েছি।
এই এলাকার অন্য বাসিন্দাদের একই অভিযোগ। তারা বলেন, ‘অজানা কারণে দীর্ঘদিন থেকে নতুনভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছি না। বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলেও সেখান থেকে জবাব আসে না। এতে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’ এছাড়া গ্রাহকদের অভিযোগ, বাড়তি বিল আদায় করা হয়। একই পরিষেবা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে অনেককে দ্বিগুণ বিল গুণতে হচ্ছে। অভিযোগ করলেও সমাধান মিলছে না। এক গ্রাহক বলেন, ‘আগে মাসে ৫০০ টাকা বিল আসতো। এখন হাজার টাকার ওপরে বিল আসছে। এ বিষয়ে অভিযোগ করলেও সমাধান পাচ্ছি না। দিন দিন বিল বাড়ছেই।’
রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী মিটার ও সার্ভিস ড্রপ তার সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু মিটার পেলেও সার্ভিস ড্রপ মোটেও পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে গ্রাহককে নতুন সংযোগ দিতে পারছি না। কোন গ্রাহক সার্ভিস ড্রপের তার কিনে দিলে আমার সংযোগ দিয়ে দিচ্ছি। তবে তাঁরের সংকট কবে কাটবে এটা সঠিক করে বলা যাচ্ছে না।
মেসেঞ্জার/সুমন/ইএইচএম