ছবি : মেসেঞ্জার
স্বজনদের দ্বারা নিজ বসত ঘর থেকে বেদখল হয় সত্তরোর্ধ এক বিধবা। কোন উপায়অন্তর না পেয়ে আদালতের ধারাস্ত হন তিনি। অবশেষে আদালতের নির্দেশে নিজ বসত ঘরে জায়গা হলো নোয়াখালী হাতিয়া পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ডের বিধবা হাসনা আরা বেগমের। হাতিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের ২৬/২০২২ নং দেওয়ানী মোকদ্দমার ১৮৬ নং স্মারকে বাদীনি (হাসনা আরা বেগম) কে পূর্বের অবস্থায় প্রতিষ্ঠার আদেশ দেন। আদেশের প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও হাতিয়া থানা ওসি (তদন্ত) তাকে বুঝিয়ে দেন।
এর আগে (১ সেপ্টেম্বর) বাদীপক্ষ আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করলে সিনিয়র সহকারী জজ শিশির কুমার বসু তা শুনানি শেষে বিবাদীদের বিরুদ্ধে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। কিন্তু বিবাদীপক্ষ সুকৌশলে বিবদমান উক্ত বাড়ীটি জবরদখল পূর্বক বাদিনীকে গৃহ থেকে বের করে দেয়।
পরে বাদীপক্ষ (৫ নভেম্বর) অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করলে সিনিয়র সহকারী জজ শিশির কুমার বসু উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এই মর্মে আদেশ দেন যে। পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও অফিসার ইনচার্জ হাতিয়া থানা বাদীনিকে যেনো স্বসম্মানে তার নালিশী ভূমি ও গৃহে প্রবেশের ব্যবস্থা করে দেন।
আদেশে আরও বলা হয়, আদালতের আদেশ লঙ্ঘনের বিষয়ে দায়ী ব্যক্তিদের নাম ঠিকানা উল্লেখ পূর্বক পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন যেনো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে দাখিল করা হয়। এবং সংক্ষুব্ধ পক্ষকে বিবাদীদের বিরুদ্ধে বিবিধ (ভায়োলেশন) মামলা করার নির্দেশ দেন আদালত।
এসময় আইনশৃৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে বিবাদী শাহেনা আকতার বাদিনীর ছেলে ফখরুল ইসলামকে মারমূখী উগ্র আচরণ ও হুমকি প্রদর্শন করায় তিনি (২১ নভেম্বর) হাতিয়া থানায় একটি জিডি করেন। হাতিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি নং- ৭৪৩। এ বিষয়ে হাতিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, আদালতের নির্দেশনা আমরা বাস্তবায়ন করেছি।
উল্লেখ্য, হাতিয়া পৌরসভার লক্ষীদিয়া গ্রামের এমপির পোল সংলগ্ন আজিজুল হক বাবরের মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে ফখরুদ্দীন ২৮ শতকের বসত বাড়িটি মা ও ভাইবোনদেরকে বাদ দিয়ে ২০১৭ সালে নিজ নামে রেজিস্ট্রী করে নেন। পরে মৃত আজিজুল হক বাবরের স্ত্রী হাসনা আরা বেগম বাদী হয়ে ফখরুদ্দীন ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে সিনিয়র সহকারী জজ হাতিয়া আদালতে ২৬/২০২২ নং দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়ের করেন।
মামলা শুনানীকালে ফখরুদ্দীন মৃত্যুবরণ করেন। পরে ফখরুদ্দীনের স্ত্রী-সন্তানরা বাড়িটি একক দাবী করে হাসনা আরা বেগমকে বেদখলের উদ্যোগ নিলে তিনি আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে চলতি বছরের (১ সেপ্টেম্বর) আদালত বিবাদীগনের বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
কিন্তু (৫ সেপ্টেম্বর) ফখরুদ্দিনের স্ত্রী ও ছেলে ফাহাদ'রা আদালতের ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাড়ীতে ঢুকে অবস্থান করেন। ফলে হাসনা আরা তখন থেকে তার বাড়ীতে বেদখল হন। অবশেষে আদালতের নির্দেশে নিজ বসত ঘরে জায়গা হলো বিধবা হাসনা আরা বেগমের।
মেসেঞ্জার/রাসেল/তারেক