ছবি: মেসেঞ্জার
সফলতার সাথে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) উপাচার্য হিসেবে ২ মাস পূর্ণ করলেন দেশ বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ২ মাসের কর্মকাণ্ড মূল্যায়নে সাফল্য-ব্যর্থতায় নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। এই সময়টাতে তিনি প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা বৃদ্ধি, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মানুবর্তিতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
উপাচার্য ড. রফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট নিয়ন্ত্রণ, অবকাঠামো উন্নয়নে ৪৬০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাকে শতভাগ মাদকমুক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। উপাচার্য ড. রফিকুল ইসলাম ২৪ এর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হৃদয় তরুয়ার পটুয়াখালীর বাসায় গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সাহায্য প্রদান করেন এবং তার বড় বোন মিতু তরুয়াকে বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইব্রেরি এটেনডেন্ট পদে নিয়োগ প্রদান করেন।
জিএসটি গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করা শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্মানী অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি দেয়া এবং দ্রুততম সময়ে সবার ব্যাংক একাউন্টে প্রদান করার তিনি ব্যবস্থা করেন।
ক্যাম্পাসকে শতভাগ মাদকমুক্ত করার জন্য উপাচার্য ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা সেলের মাধ্যমে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নেয়ার কারণে ক্যাম্পাস এখন অনেকটাই মাদকমুক্ত হয়েছে। অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শ্রেণিকক্ষসমূহ আকস্মিক পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষার্থীদের মতামত নিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেন।
পটুয়াখালী জেলা এবং দুমকি উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে ক্যাম্পাসের পার্শবর্তী পীর তলা বাজারের খাল এর পরিছন্নতা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
ক্যাম্পাস সৌন্দর্য বর্ধনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। পবিপ্রবি পরিবারের কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিহত হলে অথবা অবসরে গেলে তার পেনশনের অর্থ দ্রুততম সময়ে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। পরিবহন খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ বেশকিছু উল্লেখযোগ্য মেগা ইস্যুর সমাধান ও অর্জন করতে সক্ষম হয় বর্তমান উপাচার্যের সফল নেতৃত্বের কারণে।
এছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি, ক্যাম্পাসকে র্যাগিংমুক্তকরণ, সার্টিফিকেট যাচাইয়ের জন্য ‘ব্লক চেইন’ পদ্ধতি চালু, শিক্ষার্থীদের ডাটা প্যাকেজ প্রদান, ক্যাফেটেরিয়া ও আবাসিক হলগুলোতে খাবারের মান বৃদ্ধি, লাইব্রেরি ও মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন, খেলাধুলায় বাজেট বৃদ্ধি, প্রশাসনিক ভবনসমূহে বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিকরণ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও গৃহ নির্মাণের জন্য ঋণ সুবিধা প্রদান প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
পবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর নানা সমস্যা, সংকট ও অবহেলিত থাকলেও ২৫ বছরের ইতিহাসে তুলনামুলক বিগত ২ মাসে ইতিবাচক কর্মকান্ড বেড়েছে এবং অনেক দূর এগিয়েছ ।
২ মাস পূর্ণ হওয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, 'শিক্ষা ও গবষেণায় আমরা প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছি। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পবিপ্রবি অনন্য অবস্থানে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সমস্যা ও সংকট ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছে। শিক্ষা ও গবেষণার পূর্ণাঙ্গ পরিবেশ তৈরি করতে যা যা দরকার, তা-ই করছি। সরকার এবং ইউজিসি থেকে কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা পাচ্ছি।
অবকাঠামোগত দিক থেকে আমরা পিছিয়ে থাকলেও বর্তমানে চলমান ৪৬০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ কম্পিলিট হলে আমাদের অবকাঠামোগত তেমন কোন সমস্যা থাকবে না। পবিপ্রবিকে প্রথম সারির এবং আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে আমাদের প্রচেষ্টার অন্ত নেই।' এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রায় সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
মেসেঞ্জার/ তুহিন/তারেক