ছবি : মেসেঞ্জার
রাষ্ট্রের কোন প্রতিষ্ঠান কোন দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠির নয়। এটা সকল জনগণের। সে কারণে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহীতার আওতায় আনার দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাতে রংপুর টাউন হলে ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষে অভ্যুন্থানের শক্তি নাগরিক, আহত ও শহীদ পরিবারের সাথে রংপুর মহানগর ও জেলা সংগঠকদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় এই দাবি করেছেন নেতারা। এসময় বক্তব্য রাখেন নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ও রংপুর বিভাগের সমন্বয়কারী আতিক মুজাহিদ ও ডা.মো: আব্দুল আহাদ, রংপুরের সমন্বয়ক আলমগীর নয়ন, এমআই সুমন, আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় আসা প্রতিনিধিরা প্রশ্ন করেন সমন্বয়কদের। উত্তর দেন সমন্বয়করা। চিকিৎসা ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম সংক্রান্ত প্রশ্ন করেন এক থানা প্রতিনিধি। উত্তরে রংপুর বিভাগের সমন্বয়কারী ডা. মো: আব্দুল আহাদ বলেন, আমি নাগরিক কমিটির হেলথ (স্বাস্থ্য) বিভাগটা দেখছি। আমরা মনে করি রংপুর বিভাগে রংপুর মেডিকেল কলেজ একটা বড় স্টেক হোল্ডার। এছাড়াও এখানে অনেক প্রাইভেট ক্লিনিক আছে। তাদের লাগামহীন ইনভেস্টিগেশন বাণিজ্য, ওষুধ বাণিজ্য, দালালি ওপেন সিক্রেট।
এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ডা. আহাদ আরও বলেন, আমার বাবা স্ট্রোক করেছিলেন। আমি একজন নিউরো সার্জন। রংপুরে এনেছিলাম। আমার হাতের ওপরে আমার বাবা মারা গেছেন ২৪ ঘন্টার মধ্যে। কিন্তু আমি কিছুই করতে পারি নাই। আমাদের প্লান হচ্ছে বেসিক নিডগুলোকে ডেভলোপ করা। একজন স্ট্রোকের রোগিকে যদি আট ঘন্টার মধ্যে ট্রিটমেন্ট শুরু করা যায়, তাহলে চিকিৎসা শেষে রোগি বাসায় হেঁটে ফিরে যেতে পারবেন। কিন্তু আমরা সেটা করতে পারি না। তাই রংপুরে যদি স্ট্রোক সেন্টার করা যায়, তাহলে সেটা সম্ভব।
ডা. আহাদ আরও বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। এখানে কি কি করতে হবে তার জন্য আপনারা প্রস্তাবণা দেবেন। আমরা ইমপ্লিমেন্ট করার দায়িত্ব নিবো ইনশাআল্লাহ। ল কলেজে লাগামহীন দুর্ণীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন করেন এক প্রতিনিধি। উত্তরে রংপুর বিভাগের আরেক সমন্বয়কারী ও সংবিধান সংস্কার কমিটির সদস্য আতিক মুজাহিদ বলেন, ল কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে। কুড়িগ্রাম ল কলেজে যিনিই ঢোকেন, তিনিই চেতনাবাজ হন। এখানে শিক্ষক ১২ জন। তার মধ্যে ১১ জন ফ্যাসিস্ট। ১ জন বিএনপির। তিনিও তাদের সাথে তাল মেলান। আপনারা এসবের তালিকা করবেন। এটা কোন ব্যাক্তির প্রতিষ্ঠান নয়। এটা কোন দলের প্রতিষ্ঠান নয়। এটা হচ্ছে মানুষের প্রতিষ্ঠান। দুর্ণীতি যারা করেছেন। নাগরিক কমিটির ল বিভাগ এটা দেখবে।
মুজাহিদ বলেন, গত ১৭ বছরে সব প্রতিষ্ঠান ধংস করে ফেলা হয়েছে। আমাদের কথা ছিল সংস্কার এবং পুনর্গঠন। প্রতিষ্ঠান নস্ট করে ফেলছে কিছু লোক। এদের রাখার কোন সুযোগ নাই। এই নিরপেক্ষ সময়ে যদি কোন পরিবর্তন না হয়। তাহলে অন্য সময় সেটা হবে না।
পিআর কনসেপ্ট সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে সংবিধান সংস্কার কমিটির সদস্য আতিক মুজাহিদ বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি একটি প্রেশার গ্রুপ। এখান থেকে কিছু লোক হয়তো রাজনীতি করতে পারে। কিন্ত এটা কোন রাজনৈতিক দল নয়। আমরা প্রস্তাবনা দিয়েছি পিআর এর ক্ষেত্রে দ্বি-কক্ষ বিশিস্ট করা হোক। আমি সংবিধান সংস্কার কমিটির সদস্য হিসেবে এটা আরও জোড়ালোভাবে আলোচনা করবো।
এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিনিধি কমিটি দিবো সবখানে। তখন আপনারা বেসিক নিডগুলো নিয়ে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন। এখনই আমাদের সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে ২৪ এর আকাঙখা পূরণ হবে না।
মেসেঞ্জার/মাজহারুল মান্নান/তুষার