ছবি: মেসেঞ্জার
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক এখন যেন এক আতংকের নাম। গাড়ি চলাচলে চরম মুশকিল হয়ে পড়েছে। দিনেই সড়কটি ঠিক থাকলে সন্ধ্যার পর থেকে দেখা মিলে লবন বোঝাই ট্রাক। যেন এক আতংক। প্রতিদিন রাতে খোলা ট্রাকে করে লবণ পরিবহনের কারণে গলে পড়া (নিঃসৃত) পানিতে মারাত্মক পিচ্ছিল হয়ে ওঠেছে মহাসড়ক। লবনের পানি পিচ্ছিল হয়ে সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ আকারে ধারণ করেছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নেই কোন উদ্যোগ।
কোন সুরক্ষা ছাড়াই প্রতিদিন শত শত ট্রাকে করে এসব লবণ পরিবহনে সড়ক পিচ্ছিল হওয়ায় দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে লোহাগাড়ার সীমানা চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকা হতে ঠাকুরদিঘী পর্যন্ত সড়কে লবনের গাড়িগুলোর কারণে চলাচলে চরম বিপাকে পড়েছে স্থানীয়রা,পথচারি,পর্যটক ও অন্যান্যরা।
জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। এ সড়ক দিয়ে কক্সবাজার থেকে লবনের পানি বোঝাইকৃত বড় বড় ট্রাকে করে চট্টগ্রামের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। যার ফলে লোহাগাড়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ চুনতি জাঙ্গালিয়া স্পটসহ লোহাগাড়ার অংশে বিভিন্ন স্পট, কেরানিহাট, চন্দনাইশ ও পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে দুর্ঘটনা যেন লেগেই আছে।
মোটর সাইকেল আরোহী, পদুয়া ইউপি সদস্য আমানুল হক বলেন, প্রতিদিন লবণবাহী ট্রাক থেকে পানি পড়ে মহাসড়ক পিচ্ছিল হওয়ার কারণে আমরা প্রতিনিয়ত বাইক চলার সময় আতংকে থাকি, গাড়ি স্লিফ করে বেশি, অনেক কস্টে বাইক চালাতে হয়।সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
লোহাগাড়া প্রেস ক্লাব সভাপতি এম সাইফুল্লাহ চৌধুরী জানান, প্রতিদিন লবণবাহী ট্রাক থেকে পানি পড়ে মহাসড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত মহাসড়ক ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।মহাসড়কে পিচ্ছিলের কারণে দিন দিন দুর্ঘটনার স্বীকার হতে হচ্ছে।
নিরাপদ সড়ক চাই লোহাগাড়া শাখার সভাপতি মোহাজিদ হোসাইন সাগর জানান, লবণবাহী ট্রাক থেকে নিঃসৃত পানি রাস্তায় পড়ে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যায়। ফলে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।এই মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকবাহী গাড়ি কক্সবাজার যায়। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষভাবে কোন ধরণের ভূমিকা দেখতে পাচ্ছিনা। তাই লবণবাহী ট্রাক থেকে যাতে পানি নিঃসৃত না হয় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ জরুরি।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন,চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে লবন বোঝাই ট্রাকের কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। লবণের গাড়ি দেখলেই আমরা মামলা দিয়ে সতর্ক করছি, ইতিমধ্যে লবণ বোঝাই কিছু ট্রাক গাড়িকে মামলা দেওয়া হয়েছে। আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রাম দক্ষিণের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন,মহাসড়কে লবন বোঝাই ট্রাকের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। খোলা ট্রাকে করে পরিবহনের সময় লবণ পানি নিঃসৃত হয়ে মহাসড়কের বিটুমিনের কার্পেটিংয়ের প্রলেপ উঠে যাচ্ছে। সড়কে ভাঙন দেখা দেয়। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
মেসেঞ্জার/রায়হান/জেআরটি