ঢাকা,  সোমবার
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

চুরির দুই মাসেও উদ্ধার হয়নি মালামাল, অনিশ্চয়তায় ব্যবসায়ী

জেলা প্রতিনিধি, নীলফামারী

প্রকাশিত: ২০:৫৮, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

চুরির দুই মাসেও উদ্ধার হয়নি মালামাল, অনিশ্চয়তায় ব্যবসায়ী

ছবি : মেসেঞ্জার

নীলফামারীর ডোমারে 'মিম টেলিকম' নামের একটি মোবাইলের দোকানে চুরির ঘটনার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও মালামাল উদ্ধারে অনিশ্চয়তায় রয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী। এদিকে মালামাল উদ্ধার না হওয়ায় প্রশাসনের প্রতি এসেছে অনাস্থা।

চলিত বছরের ০২ অক্টোবর ডোমার বাজার সাহাপাড়া সড়কে 'মিম টেলিকমে' সকালে চুরির ঘটনা ঘটে। চুরি হওয়া সামগ্রীর মধ্যে ছিলো স্মার্টফোন যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা। এ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ চেয়ে ডোমার থানা পুলিশ, নীলফামারী র‍্যাব-১৩, পুলিশ সুপার, নীলফামারী সেনা ক্যাম্প বরাবর আবেদন জানান মিম টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. রিপন হক।

মো. সোহেল রানা নামের এক এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। মিম টেলিকমের চুরির ঘটনায় চোর ধরার পরও মালামাল উদ্ধার না হওয়ায় আমরা হতাশ। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসনের আরও তৎপরতা প্রয়োজন।

দোকান কর্মচারী শামিম ও আনন্দ জানান, দোকান চুরির পর থেকে আইনি সহযোগীতার জন্য দোকান মালিকের সাথে আমাদের বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। দোকানে পর্যাপ্ত মালামাল না থাকায় আমরা বিভিন্ন কোম্পানির যারা এখানে আছি তাদের কারোই মাসিক টার্গেট ঠিকঠাক মতো পূরণ হচ্ছেনা। টার্গেট পূরণ না হওয়ায় আমরাও অল্প বেতনে পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।

এদিকে চুরির শিকার হওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মিম টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. রিপন হক জানান, ঘটনার পরপরই থানায় মামলা করি। পুলিশ বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত চুরি হওয়া মালামালের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ব্যাংক ও এনজিও মিলে প্রায় ১কোটি টাকা লোন নিয়ে ব্যবসা করছিলাম। দোকান চুরির পর থেকে ঋণের কিস্তি দিতে পারছিনা। দোকানের ১৫ জন কর্মচারী তাদের ঠিকঠাক মতো বেতন দিতে পারছিনা। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আমি পথে বসে গেছি।

মিম টেলিকমে চুরির ঘটনায় ডোমার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আনিছুর রহমান আনু গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন । তিনি জানান, এই ধরনের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মিম টেলিকমে চুরির বিষয়ে সমিতির পক্ষ থেকে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রশাসনিক এমন ভূমিকার জন্য ব্যবসায়ীদের মনোবলও দুর্বল হচ্ছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাকিল মাহমুদ জানান, মামলাটি তদন্তাধীন তবে অভিযান চালিয়ে গত ১৯ নভেম্বর  কুমিল্লা থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই চুরির ঘটনায় মোট ছয়জন জড়িত আছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। আসামীদের এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তারা কেউই এলাকায় থাকেন না সবার নামে ইতিপূর্বে ৭-৮ টা মামলা রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো মালামাল উদ্ধার করা যায়নি তবে অনুসন্ধান অব্যগত রয়েছে। চুরির ঘটনা সংঘটিত হবার বেশ কিছুদিন পূর্বে থেকে তারা দোকানটি পর্যবেক্ষণ করেছে বলে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে।

ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলাম, এ মামলায় অভিযান চালিয়ে দুইজন আসামীকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও চারজন পলাতক রয়েছে। চুরির পর সব মালামাল বিক্রি করে ফেলায় কোনো মালামাল উদ্ধার করা যায়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত এলাকার কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। মালামাল উদ্ধার ও আসামীদের গ্রেফতার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

মেসেঞ্জার/রিপন/তুষার