ছবি: মেসেঞ্জার
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দন দাসকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে নানা কৌশল অবলম্বন করেও অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। গতকাল বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাত ১২ টার দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে, চট্রগ্রামের মামলায় গ্রেপ্তার করায় আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানা-পুলিশের একটি দলের কাছে আসামী চন্দনকে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আসামি চন্দন ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জে আসছেন, এমন তথ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ আগে থেকেই পেয়েছিল। তিনি ট্রেনে ওঠার পর তথ্যটি জানানো হয় ভৈরব থানা-পুলিশকে।
পরবর্তীতে চন্দন সরাসরি ট্রেনে ভৈরবে আসেননি। ট্রেন পরিবর্তন করায় তাঁর আসতে দেরি হয়। রাত ১২টার দিকে তাঁকে ভৈরব রেলস্টেশন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার চন্দন চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার সেবক কলোনির মেথরপট্টির ধারী দাসের ছেলে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি ভৈরব পৌর শহরের সুইপার কলোনিতে।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিন মিয়া বলেন, চন্দন আত্মগোপন করতে শ্বশুরবাড়ি ভৈরবে আসছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি নানা কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি সরাসরি ট্রেনে ভৈরব আসেননি, ট্রেন পরিবর্তন করে আসেন। এতেকরে তার আসতে দেরী হয়।
সম্ভাব্য সময়ের চার ঘণ্টা পর চন্দনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। ভৈরব স্টেশনে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার মধ্যে আসামি চন্দনের নেমে পড়ার কথা ছিল। অনেক আগে থেকেই সাদাপোশাকে স্টেশন এলাকায় অবস্থান নেয় পুলিশ। প্ল্যাটফর্ম ত্যাগ করার সম্ভাব্য সব জায়গা ঘিরে ফেলা হয়। ট্রেন আসে ট্রেন যায়, চন্দন আর কোন ট্রেন থেকে নামেন না।
অবশেষে তিনি ট্রেন থেকে নামেন রাত ১১টার পর। পুলিশের হাতে ধরা পড়েন রাত পৌনে ১২টায়। তখন তাঁর মুখে মাস্ক ছিল। এসময় তিনি একটি ব্যাগ হাতে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের বাইরে রিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
মুখে মাস্ক থাকায় চন্দনকে প্রথমে চিনতে সমস্যা হচ্ছিল। গোয়েন্দা পুলিশ আগেই চন্দনের শার্ট ও প্যান্টের রং জানিয়েছিল। ধরা পড়ার পর তিনি নাম-পরিচয় গোপন করেননি। চন্দনকে ভৈরব থানায় আনা হলে সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমে তিনি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করছিলেন।
পরে সাইফুলকে কোপানোর ভিডিও দেখানো হয় তাকে। সেখানে চন্দনের চেহারা স্পষ্ট ছিল। ভিডিও দেখার পর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আর অস্বীকার করেননি তিনি।
এদিকে চন্দনের শ্বশুরবাড়ি ভৈরব পৌর শহরের সুইপার কলোনিতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে কেউ নেই। চন্দনের শ্বশুর নন্দু পেশায় ডোম ছিলেন। সাত বছর আগে তিনি মারা যান। শাশুড়ি রশ্মি পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে কলোনিতে থাকেন। ১৪ বছর আগে চন্দন ও বিন্দিয়ার বিয়ে হয়। এ দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে।
কলোনির অন্য বাসিন্দারা জানান, চন্দন শ্বশুরবাড়িতে কম আসতেন। তাঁদের কেউ জানতেন না চন্দন চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা মামলার আসামি। গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিষয়টি তারা জানতে পেরেছেন।
মেসেঞ্জার/সাজু/জেআরটি