ছবি : মেসেঞ্জার
বরগুনার আমতলীতে ব্যবসায়ী নিয়াজ মোর্শ্বেদ তনয়ের আত্মহত্যায় দোষী ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে সহস্রাধিক মানুষের অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১০ টায় আমতলী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়।
জানা যায়, ছয় বছর আগে আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আলহাজ্ব নান্নু মোল্লার ছেলে নিয়াজ মোর্শ্বেদ তনয়ের সঙ্গে চাওড়া চলাভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী ফারুক গাজীর মেয়ে ফারিয়া জান্নাতি মীমের বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস পর স্বামী তনয় জানতে পারেন তার স্ত্রী মীমের আরও একটি বিয়ে হয়েছিল। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। আরও জানতে পারে, ওই দম্পতির ঘরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যে তার স্ত্রী মীম তারেক হাসান বাহাদুর নামের আরও এক ছেলের সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েছে। পরকিয়া প্রেমিক নিয়ে তিনি (মীম) বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং টিকটক ভিডিও তৈরি করে সোসাল মিডিয়ায় প্রচার করছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তনয় স্ত্রী মীমকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর তালাক দেন। তালাক নোটিশ পেয়ে ১৭ অক্টোবর মীম তার স্বামী তনয়ের বিরুদ্ধে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে যৌতুক মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই পুলিশ তনয়কে গ্রেপ্তার করে। এ মামলায় তনয় ১১ দিন জেল হাজতে ছিলেন। স্ত্রী ফারিয়া জান্নাতি মীম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা স্বামী তনয়কে বিভিন্নভাবে হয়রানি করতো। এতে তনয় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে সে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। স্ত্রীর পরকিয়া ও তার পরিবারের লোকজনের বুলিং ও হয়রানির এমন কর্মকাণ্ড সইতে না পেরে গত ২৯ নভেম্বর ভোররাতে তনয় স্ত্রী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও তার স্বজনদের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস পোস্ট করেন। মুহূর্তেই সেই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এরই মধ্যে তিনি বিষপান করলে গত (৩০ নভেম্বর) ঢাকা শহীদ সোহরাওয়াদী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় গত (৫ ডিসেম্বর) আমতলী থানায় তনয়ের বড় বোন অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে তনয়ের স্ত্রী ফারিয়া জান্নাতি মীমকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নামে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই পুলিশ মীমের বড় ভাই আসামি খালিদ গাজীকে গ্রেপ্তার করে।
আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবী মো. আরিফ উল হাসান আরিফের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন তনয়ের বাবা মো. নান্নু মোল্লা ও বড় বোন মামলার বাদী আইনজীবী তানিয়া আক্তার।
বাদী তানিয়া আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আসামিরা মামলা তুলে নিতে আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি মামলা তুলে না নিলে আমাকে ও আমার মেয়েকে অপহরণের হুমকি দিচ্ছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, নিয়াজ মোর্শ্বেদ তনয়কে আত্মহত্যায় প্ররোচনার একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
মেসেঞ্জার/হিমাদ্রি/তুষার