ছবি: সংগৃহীত
টেলিগ্রাম অ্যাপসে গ্রুপ খুলে "সিক্রেট গ্রুপ" নাম দিয়ে মাদক কারবারি, দেহ ব্যবসা থেকে শুরু করে নানা অপরাধ করছে কিছু চক্র। নারী দিয়ে পেতে রাখা ফাঁদে এসব চক্র বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে রেখে করছে চাঁদাবাজি। কেড়ে নিচ্ছে সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র। মুক্তির পর মুক্তিপণ পরিশোধের চুক্তিতে দিচ্ছে মুক্তি। তবে দাবি করা টাকা না পেলে করছে ব্ল্যাক মেইলিং। এদিকে সামাজিকভাবে সম্মানহানির ভয়ে অনেকে টাকা দিয়ে সব ঠিক করে নিচ্ছিন। আইনী ব্যবস্থা নিতেও অনিহা ভুক্তভোগীদের।
এমনই এক নারীর ফাঁদে পড়েছেন চট্টগ্রাম নগরের এক চা ব্যবসায়ী। প্রেমের সম্পর্কের পর পরিবারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার নামে ঘরে নিয়ে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে চক্রটি। পরে জিম্মি করে হাতিয়ে নিয়েছে মোবাইল ফোনসহ নগদ টাকা।
এ ঘটনায় তিন নারী এক শিশুসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ডবলমুরিং থানা পুলিশ। তারা "ভিআইপি সিক্রেট গ্রুপ" নামে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপের সক্রিয় সদস্য বলেও জানায় পুলিশ।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে নগরের দেওয়ান হাট পাঠানটুলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অভিযুক্তরা হলেন, তানজিল আক্তার (২৭), নাবিলা আক্তার হ্যাপি (২০), শামীমা আকতার (৩৬), মো. সাদেক হোসেন বাপ্পি (২২) ও আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত শিশু মেহেদী হাসান প্রান্ত (১৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ।
তিনি বলেন, গত ৬ নভেম্বর একজন চা-পাতা ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় হয় নাবিলা আক্তার হ্যাপির। গত ৯ ডিসেম্বর ওই ব্যবসায়ীকে কৌশলে নিজের বাসায় নিয়ে যায় হ্যাপি। এসময় "ভিআইপি সিক্রেট গ্রুপ" এর অন্য সদস্যরা ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে মোবাইল ফোন ও ১৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। দাবি করা বকেয়া টাকা পরিশোধের কথা জানিয়ে ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয়। তবে পরদিন ১০ ডিসেম্বর দুপুর পৌনে ৪টার থেকে বিভিন্ন ফোন নাম্বার থেকে কল দিয়ে চাঁদা দাবি করছিল অভিযুক্তরা। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগের পর ১১ নভেম্বর রাত ২টায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে ডাবলমুরিং থানা পুলিশ। এ সময় অভিযুক্তদের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
ডাবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রবিউল হোসেন দ্যা ডেইলি মেসেঞ্জারকে বলেন, প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই ব্যবসায়ীকে পরিবারের লোকজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার নামে ঘরে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে চাঁদা দাবি করে চক্রটি। এ সময় ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথিত প্রেমিকা হ্যাপি এর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ভিআইপি সিক্রেট গ্রুপ সদস্যরা। এরপর তাকে আটক করে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ব্যবসায়ী তার কাছে থাকা নগদ ১৮ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। এরপর তাকে ফোন কলে ব্ল্যাকমেইলিং করছিল চক্রটি। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মেসেঞ্জার/সাখাওয়াত/এসকে/ইএইচএম