ছবি : মেসেঞ্জার
বোরো ধানের বীজতলা পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের কৃষকেরা। চলতি বছর সঠিক সময়ে পানি নেমে যাওয়ায়, পাশাপাশি চলছে ধানের চারা রোপনের জন্য জমি তৈরির কাজও। তবে, বীজধান ও সার-ডিজেলের দাম বেশি থাকায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তায় কৃষক। সঠিক পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস কৃষি বিভাগের।
প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করেই কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বোরো ধানের বীজতলার পরিচর্যায়। নিয়ম করে সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলায় দিচ্ছেন পানি। দিয়ে যাচ্ছেন সার-কীটনাশকও। এতেকরে বীজতলা ইতিমধ্যেই সবুজে সবুজে একাকার।
চলতি মৌসুমে হাওরের পানি সঠিক সময়ে নেমে যাওয়ায় ধানের চারা রোপনের জন্য জমি তৈরী করারও ধুম লেগেছে। জেলার এক হাজার চারশত সত্তুর বর্গকিলোমিটার হাওরাঞ্চলে বছরের এ সময়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয় বোরো ধান আবাদের। তাই এবারও বোরো আবাদের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত কৃষক।
জেলার শতভাগ হাওর অধ্যুশিত ইটনা হাওরের কৃষক ছালাম মিয়া বলেন, এবছর হাওরের পানি সময়মত নামাতে আমাদের কাজকাম করতে সুবিধা হয়েছে। বীজধান রোপন করেছি, চারা বড় হচ্ছে, ক্ষেতে লাগাবো। আবহাওয়া যদি ভাল থাকে আবাদ করে লাভবান হবো। একই হাওরের কৃষক জমির আলী বলেন, চার মন বীজ ধান ফেলেছি। বীজতলায় পানি দিতেছি, সার দিতেছি, আবহাওয়া ভাল থাকলে মনের আনন্দে রোপন করবো।
হাওরাঞ্চলে বোরো ধান ফলাতে গিয়ে প্রতি বছর পোকামাকড়ের আক্রমণ এবং আগাম বন্যা নিয়ে চিন্তিত থাকেন চাষীরা। এবছর বীজধান এবং সার-ডিজেলের দাম বেশি থাকায় যোগ হয়েছে বাড়তি চিন্তা।
মিঠামইন হাওরের কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, চলতি বছর বীজ ধান কিনেছি ৬০০ টাকা কেজি, আগে ছিলো ৩০০ টাকা কেজি। এর পরেও পাওয়া যাচ্ছেনা, বীজ ধানের ক্রাইসিস। এখন চাড়া বড় হচ্ছে, জমিতে রোপন করবো, জমিও তৈরী করতেছি। সরকার যদি বীজধান, ডিজেল এবং সারের দর কমিয়ে দিতো তাহলে ভাল হতো।
হাওরাঞ্চলের চাষিদের বোরো ধানের বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে আবাদের সকল পরামর্শসহ পাশে থাকার কথা জানালেন জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, এবছর কিশোরগঞ্জ জেলায় বোরো আবাদের জন্য বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাত হাজার নয় শত হেক্টর জমিতে।
কৃষকগণ নিয়মিত বীজতলা পরিচর্যা করছে এবং আমাদের উপসহকারি কৃষি অফিসারগণ কৃষকদের পাশে থেকে কিভাবে বীজতলা পরিচর্যা করতে হয় সেই বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। কোথাও কোন সমস্যা পরিলক্ষিত হলে সাথে সাথে আমাদেরকে অবহিত করছেন। আমরা সমাধান দিচ্ছি। আশা করছি আমাদের সকল লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
চলতি মৌসুমে জেলায় এক লাখ ৬৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু হাওরেই আবাদ হবে এক লাখ চার হাজার হেক্টর জমিতে। যা থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৮ লাখ মেট্রিকটন চাল।
মেসেঞ্জার/সাজু/তারেক