ছবি : মেসেঞ্জার
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মন্নানের বসতবাড়ি জবর দখল করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি আসছে একটি সন্ত্রাসী চক্র। চাঁদা না দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার উপর একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবার প্রতিকার চেয়ে থানায় মামলা করায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। বৃদ্ধ বয়সে এসে হুমকি ধামকির মধ্য দিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মন্নান।
আব্দুল মন্নান হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড চর ফকিরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং সাবেক সেনাবাহিনীর সদস্য।
তিনি বলেন, ‘চাঁদার টাকা না দেওয়ায় মাইর খেতে হয়, এই বয়সে এসে মানুষের হামলার শিকার হতে হয়, কারো কাছে লজ্জায় কিছু বলতে পারিনা, আমি বেড়ীর পাশের জায়গায় বসবাস করি, তারা আমার জায়গার লোভ করছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট এর বিচার চাই’।
ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মন্নানের ছোট মেয়ে সুলতানা আক্তার বলেন, আমার বাবা বাড়িতে একা থাকেন। প্রায় সময় প্রতিবেশী আকবর আমার বাবার থেকে টাকা পয়সা দাবি করে। তার উদ্দেশ্য আমরা যেন বাড়ী ছেড়ে চলে যাই। সে সব সময় গায়ে পড়ে ঝগড়া করে। সমান্য বিষয় নিয়ে আমার বাবাকে কয়েকবার মারধর করেছে।
(২৯ নভেম্বর) আমি বাবার বাড়ী বেড়াতে আসলে ওই দিন রাত নয়টার সময় হঠাৎ আকবর এবং তার ভাইয়েরা সহ কয়েকজন আমাদের ঘরে ঢুকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমাদের ঘরের দরজা, জানালা, আলমারি ভাংচুর করে। আলমারিতে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মালামাল চুরি ও লুট করে এবং আমাদের সবাইকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
আমরা নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করেন এবং আমাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
আমার বাবাসহ আমি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর (২ ডিসেম্বর) তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালত মামলাটি রেকর্ড করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হাতিয়া থানাকে নির্দেশ দেয়। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উপরন্তু আসামীরা আমাকে এবং আমার বাবাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বলতেছে। মামলা তুলে না নিলে আমাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি ধামকি দিচ্ছে। বিষয়টি আমি থানায় জানিয়েছি।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, মৃত শের আলীর ছেলে আকবর হোসেন, আবুল কালাম, ফারুক ও আকবর হোসেনের স্ত্রী রিক্তা বেগম, ফারুরে স্ত্রী তাছলিমা বেগম, রুবেলের স্ত্রী আমেনা বেগম। তারা সবাই সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড চর ফকিরা গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, আকবর এক সময় জলদস্যু ছিলো। সে এলাকার কারো কথা তোয়াক্কা করেনা। আজ একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা করে তারা সাহস পেয়েছে, কাল আবার আরেকটা পরিবারের উপর হামলা করবে। আমরা তাদের শাস্তি চাই। যেন এমন অন্যায় কারো সাথে আর না করতে পারে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আকবর হোসেনের মুঠোফোনে বলেন, আমি কোন চাঁদা দাবি করিনি হুমকি ও দিইনি। আর যে হামলার কথা বলা হয়েছে তাও মিথ্যা। হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, এবিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মন্নানের মেয়ে সুলতানা আক্তারের মামলাটি পেয়েছি। আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান চালানো হচ্ছে।
মেসেঞ্জার/রাসেল/তারেক