ছবি : মেসেঞ্জার
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে পূর্বশত্রুতার জেরে ৬টি বসতঘরে আগুন ও লুটপাটের নাটকীয় তান্ডব ঘটানো হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টায় উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের মৌলারপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, পূর্বশত্রুতার জেরে মৌলারপাড় গ্রামের মৃত সফর আলীর পুত্র রফিক মিয়া ওরফে রফু ও ফজলু মিয়াসহ তাদের আপন ভাই ও ভাতিজার ৬টি বসতঘরে আগুন ও লুটপাটের তান্ডব চালায় একটি সংঘবদ্ধ দল। এসময় নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় এবং ৬টি বসতঘর, দুটি মোটরসাইকেল, ঘরে থাকা আসবাবপত্র ধান চাউল পুড়ে ভস্মীভূত হয়।
ওইদিন দুপুরের দিকে ২০/২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রফু মিয়ার বাড়ি-ঘরে একযোগে হামলা চালায়। এসময় তারা একযোগে পেট্রোল ঢেলে চারদিক থেকে টিনছাউনি এবং আধপাকা বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের ওপর সংঘবদ্ধ হামালাকারীরা আক্রমণ চালায়। এসময় তাদের আগুন নেভাতে দেওয়া হয়নি। সংঘবদ্ধ লাঠিয়ালরা রাম দা বল্লম নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের ওপর হামলার চেষ্টা করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, এটি একটি বর্বর এবং নারকীয় ঘটনা। পূর্বশত্রুতার জেরে মূলত এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। রফিক মিয়া ওরফে রফু ও ফজলু মিয়ার সাথে একই ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য আল-আমিন ও মৌলারপাড় গ্রামের দিলো মিয়ার পুত্র আল আমিন গংদের সাথে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলা মোকদ্দমা চলে আসছিল। এ ঘটনার জেরেই এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
রফিক মিয়া ওরফে রফু মিয়া বলছেন, চৌধুরীপাড়া গ্রামের মৃত লায়েছ মিয়ার পুত্র আল আমিন মেম্বার, বশির, কামাল উদ্দিন, আলাউদ্দিন তাদের নেতৃত্ব একদল সংঘবদ্ধ লাঠিয়াল বাহিনী আমাদের বাড়ি-ঘরে হামালা চালিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এবং সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ-সময় আমরা প্রাণে বাঁচতে একটি বসতঘরের ছাঁদে উঠে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করি।
পরে পুলিশ এসে আমাদেরকে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করে। তারা পুলিশের সামনেই রাম দা, সুলফি, দেশীয় অস্রশস্ত্র নিয়ে হামলা ও ভাংচুর আালায়। তারা ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকে অস্ত্রের মুখে আগুন নেভাতে দেয়নি।
তবে ইউপি সদস্য আল আমিন তাঁর ওপর আনিত আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের কারোরই এই ঘটনার সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই।’ তিনি আরো জানান, তিনি জানতে পেরেছেন রফিক মিয়া রফু ও তাদের প্রতিপক্ষ আলআমিনদের সঙ্গে ধান কাটা ও জমিসংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয় এবং এমন ঘটনা ঘটে।
উপজেলা ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ২০/২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল রাম ধা, বল্লম, সুলফি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের কাজে বাধা দেয় এবং আমাদের ওপর হামলা করতে তেড়ে আসে।
জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদুল হক বলেন, ঘটনাস্থল আমি নিজে পরিদর্শন করেছি, এটা একটি ন্যাক্কারজনক জনক ঘটানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মেসেঞ্জার/আশিস/তারেক